Header Ads

ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল পুরস্কারে সম্মানিত হতে চলেছেন বঙ্গতনয়া সুনীতা দত্ত


জলপাইগুড়ি জেলার মুকুটে যুক্ত হলো নতুন পালক। ভারতের সর্বোচ্চ নার্সিং সম্মান 'ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল পুরস্কার' অর্জন করতে চলেছেন জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের উত্তর নুনখাওয়াডাঙ্গা এলাকার স্বনামধন্য সেবিকা সুনীতা দত্ত। যা সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। সুনীতা দত্তকে নিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে এই পুরস্কার এখন পর্যন্ত অর্জন করলেন চারজন৷ তিনি প্রত্যহ নানান ঘাত-প্রতিঘাত ও সমস্যার বিরুদ্ধে একজন নারী হয়ে লড়াই করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিলের চিঠি পৌঁছে গিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরে। 

  
জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত এলাকাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। জলপাইগুড়ির বহু স্বাস্থ্যকর্মীর মুখে মুখে তাঁর প্রশংসা শুনতে পাওয়া যায়। কোভিডের সময়কালে তিনি মৃত্যুভয় ভুলে গিয়ে নিরলস ভাবে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। নাগরাকাটার আংরাভাসা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত উত্তর নুনখাওয়াডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি ২০০৬ সাল থেকে এএনএস নার্স হিসেবে কর্মরত। 

একের পর এক সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে তিনি জড়িত  আছেন। তিনি সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে গ্রামবাসীদের সামাজিক সমস্যার খোঁজখবর নিতে থাকেন। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করে নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিবার পরিকল্পনার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন প্রত্যন্ত এলাকায়। তিনি ক্যারন চা বাগানে একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্ম দিয়েছিলেন। মাদার টেরেসা ও ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলদের মতো মহীয়সী নারীরা যেভাবে সমাজের মানোন্নয়ন ঘটিয়েছেন তিনিও ঠিক সেভাবেই সমাজের মানোন্নয়ন ঘটাচ্ছেন। 

নারীদের সামাজিক উন্নয়নেও তিনি একগুচ্ছ অবদান রেখেছেন। তিনি গ্রামের বহু নাবালিকার বিয়ে আটকেছেন। সেই কাজ এখনও প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে উত্তর নুনখাওয়াডাঙ্গা এলাকার ১০ জন মহিলার মধ্যে ৮ জন মহিলার প্রসবই হতো বাড়িতে। বিগত চৌদ্দ বছরের কঠোর প্রচেষ্টাতে তিনি সেই সংখ্যাকে শূন্যে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। গ্রামে কম বয়সে পালিয়ে বিয়ে করার প্রবণতা তিনি বহুল পরিমাণে হ্রাস করেছেন। সস্তাতেও যে পুষ্টিকর খাবার পাওয়া যায় তা তিনি গর্ভবতী মায়েদের শিখিয়ে দিয়ে অপুষ্ট শিশুর জন্মে ইতি টেনেছেন। প্রায় বারো বছরে তিনি দুশো মহিলাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে সামিল করিয়েছেন। 

সুনীতা দত্তের মতো এমন মহৎ সেবিকা খুব কমই রয়েছেন সমাজে। তাঁর অসাধারণ সব কর্মকাণ্ডের জন্যই তিনি জিতে নিতে চলেছেন 'ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল পুরস্কার'। তিনি এই পুরস্কার উৎসর্গ করতে চান গ্রামবাসীদের। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments