Header Ads

নতুন বছরে দুঃসংবাদ, আবারো শুশুনিয়া পাহাড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড


বছরের শুরুতে এক ভয়াবহ দুঃসংবাদ। ৯ মাস আগের স্মৃতি আবারো ফিরে এলো। আবারো দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছে বাঁকুড়া জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শুশুনিয়া। ২০২০ সালের মার্চ মাসে শুশুনিয়াতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। সেই অগ্নিকাণ্ড কীভাবে ঘটেছিল বা কারা ঘটিয়ে থাকতে পারে কোনো তথ্যই জানা সম্ভব হয়নি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার ফলে শুশুনিয়ার গ্রামবাসীদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 


গত ১ লা জানুয়ারি সন্ধ্যার পর শুশুনিয়া পাহাড়ে হঠাৎ করেই আগুন লেগে যায়। গ্রামবাসীরা পাহাড়ে আগুন দেখে তড়িঘড়ি খবর দেয় দমকল কর্মী, একাধিক পরিবেশ সংগঠন ও ফাউন্ডেশনদের। সকলেই গোটা রাত ধরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান। শীতের কনকনে ঠান্ডায় প্রচণ্ড কষ্ট করে এই আগুন নেভাতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষকে ছুটে আসতে হয়েছে। শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা মোটেও সুখকর কিছু নয়। পাহাড় থেকে আগুনের ফুলকি পাহাড়ের পাশ্ববর্তী বাসিন্দাদের বাড়ির চালায় বা ছাদে পড়ে গেলে বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। 

শুশুনিয়াতে দ্বিতীয়বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কীভাবে ঘটেছে তার একটা মোটামুটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই ঘটনায় সন্দেহের তীর উঠছে পর্যটকদের দিকে। আদৌ পর্যটকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তাও স্পষ্ট নয়৷ তবুও একটা আন্দাজ করা হচ্ছে কারণ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ঠিক যতগুলো পিকনিক স্পট আছে তার মধ্যে বিশেষ জায়গা হলো শুশুনিয়া। প্রতি বছর এই সময়কালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে পিকনিক করতে আসেন। সেইদিক থেকে দেখতে গেলে পর্যটকদের সন্দেহ করার বিষয়টা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ 

গোটা রাত ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টাতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি৷ আজকে আরো একবার চালানো হবে আগুন নেভানোর কাজ। আগুনে প্রচুর গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। জন্তু-জানোয়ারদের আর্তনাদে পুরো পাহাড় ছেঁয়ে যায়। বেশ কিছু বন্য জীবজন্তুও মারা গেছে অগ্নিকাণ্ডের কবলে। আগেরবার এ ঘটনার তদন্ত না হলেও এবার হয়তো ঘটনার তদন্ত চালানো হবে। 

শুশুনিয়া পাহাড়ে প্রথমবার আগুন লাগার এতোমাস পর নতুন করে শুশুনিয়াতে অগ্নিকাণ্ড যথেষ্ট উদ্বেগের ব্যাপার। বন দপ্তরের কর্মীরা কড়াকড়ি ভাবে শুশুনিয়াতে এই ঘটনাগুলো দমন করতে না পারলে ভবিষ্যতে শুশুনিয়াতে বড়োসড়ো বিপদ ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পর্যটকদের জন্য শুশুনিয়াতে প্রয়োজন নির্দিষ্ট নিয়ম। পাহাড় থেকে একটু দূরে আলাদা পিকনিক স্পট বানাতে হবে। পাহাড়ের ওপর ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে। কেউ পাহাড়ে ধূমপান করলে তার জন্য মোটা অঙ্কের জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই শুশুনিয়া পাহাড় নিরাপদে থাকবে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments