Header Ads

হাওড়া জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার প্রাণকেন্দ্র হলো উলুবেড়িয়া


হাওড়া জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার প্রাণকেন্দ্র হলো উলুবেড়িয়া। রাসপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে  প্রতিবছর উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি চত্বরে রাসমঞ্চ তৈরি হয়। এর পাশাপাশি হুগলী নদী সংলগ্ন কালীবাড়ির মাঠে বিশাল বড়ো মেলা বসে। কালীবাড়ি প্রাঙ্গণে রাসমেলার মতো মাসাধিকাল ব্যাপী মেলা বোধহয় পশ্চিমবঙ্গের আর কোথাও হয় না। এই মেলা একমাস ধরে চলে। মেলাতে কয়েকশোর বেশি দোকানপাট বসে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসেন মেলা দেখার জন্য। উলুবেড়িয়া আনন্দময়ী কালীবাড়ি কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করে এই রাসমেলার। 


কার্তিক মাসের পূর্ণিমাই হলো রাস পূর্ণিমা। কথিত আছে, রাস পূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনের গোপিনী সকাশে রাধার সাথে রাস উৎসবে মেতেছিলেন গোপশ্রেষ্ঠ শ্রীকৃষ্ণ।গোপিনীদের নৃত্য ও শ্রীকৃষ্ণের প্রাণজুড়ানো বাঁশির সুরে মুখর হয়ে উঠেছিল বৃন্দাবনের পবিত্রভূমি। পরবর্তীকালে রাধা ও কৃষ্ণের এ মিলন উৎসবকে শ্রীচৈতন্যদেব নাম-সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে রাস মহাৎসবে পরিণত করেছিলেন। 

১৩৫৮ বঙ্গাব্দ অর্থাৎ ইংরেজি ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে সূচনা হয় উলুবেড়িয়া রাসমেলার। রাসবিহারী বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরে উলুবেড়িয়া রাস উৎসবের শুভারম্ভ হয়। তাঁর সহযোগী হিসেবে ছিলেন লক্ষ্মীকান্ত রায় ও ফনিন্দ দত্তের মতো মহাপ্রাণ ব্যক্তিগণ। পরবর্তীকালে মেলা  ও রাস উৎসব স্থান পরিবর্তন করে ঐ স্থানের উল্টোদিকে সরে আসে। 

উলুবেড়িয়া রাস উৎসবের মুখ্য আকর্ষণ হলো শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলার প্রতিমা।  লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে আলাদা মাত্রা পেয়ে থেকে এই রাস উৎসব। একমাস ব্যাপী উলুবেড়িয়ার রাসমেলাতে প্রত্যহ চলে পূজা অর্চণা। অপরূপ সাজে সেজে ওঠে এখানকার রাস মঞ্চ। উৎসবের শেষ তিনদিন নিয়ম করে আচার অনুযায়ী হরিনাম সংকীর্তন হয়। এখানকার রাস মেলাতে ভিড় এড়াতে পুতুলের মাধ্যমে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।   

পুরাণ মতে, শ্রীকৃষ্ণ বলেন, কেউ যদি তাঁকে ভালোভাবে জানতে চায় তবে অবশ্যই তাঁকে ভক্তির আশ্রয় নিতে হবে। সেইজন্য নাকি এই বিশেষ দিনে বৈষ্ণব ভক্তরা তাঁদের ঈশ্বরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় মেত ওঠেন রাসলীলায়। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments