Header Ads

বাঙালির জয়জয়কার, ইনফোসিস পুরস্কার ২০২০ জিতে নিলেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী


গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য এমআইটি, হার্ভার্ড এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয়জন বিশিষ্ট বিজ্ঞানীকে ২২ শে ডিসেম্বর সম্মানজনক ইনফোসিস পুরস্কার প্রদান করা হয়ে। ইনফোসিস সায়েন্স ফাউন্ডেশন (আইএসএফ) জানিয়েছে, বার্ষিক পুরষ্কারের সাথে একটি স্বর্ণপদক, একটি শংসাপত্র এবং পুরস্কার মূল্য ১০০,০০০ ডলার। 


বিজয়ীদের কম্পিউটার সায়েন্স, হিউম্যানিটিক্স, জীবন বিজ্ঞান, ম্যাথমেটিকাল সায়েন্স, পদার্থবিদ্যা এবং সমাজবিজ্ঞান এই ছয়টি বিভাগে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই বিশিষ্ট ছয়জন বিজ্ঞানীর মধ্যে রয়েছেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী। অরিন্দম ঘোষ এবং সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জিতে নিয়েছেন এই বিশেষ পুরস্কার।  অরিন্দম ঘোষ পদার্থবিদ্যায় এবং গণিতের জন্য সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জিতেছেন এই  ইনফোসিস পুরস্কার।   
বিজ্ঞানী সৌরভ চট্টোপাধ্যায় সম্ভাবনা তত্ত্ব ও পরিসংখ্যান পদার্থবিদ্যায় অসাধারণ কাজের জন্য জিতেছেন এই পুরস্কার। তিনি বিশেষ করে ফ্লাকচুয়েসেন্স ইন রেনডাম স্ট্রাকচার্স, সুপার কনসেন্ট্রেশন  ইন ইকুয়ালিটিস, স্পিন গ্লাসেস, পয়জন এবং অন্যান্য নন-নর্মাল লিমিটস, ফার্স্ট প্যাসেজ পার্কোলেশনে অবদানের জন্য তিনি খ্যাত। তিনি তাঁর প্রজন্মের অত্যন্ত বহুমুখী এবং সম্ভাবনাময় জটিল সমস্যা সমাধানের জন্যও বিখ্যাত। 

বিজ্ঞানী সৌরভ চট্টোপাধ্যায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অর্জন করেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউট কলকাতা থেকে। তারপর স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ডক্টরেট লাভ করেন। তিনি ইউসি বার্কেলে এবং কৌরান্ট ইন্সটিটিউটে শিক্ষকতা করার পর স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন ২০১৩ সালে। তিনি ইতিমধ্যেই গণিতের বিখ্যাত সব পুরস্কারগুলো জিতে নিয়েছেন। তাঁর জেতা পুরস্কারগুলির মধ্যে  উল্লেখযোগ্য হলো রল্লো ডেভিডসন প্রাইজ (২০১০), সম্ভাবনা তত্ত্বে লাইন এন্ড মাইকেল লোইভ ইন্টারন্যাশনাল (২০১৩)। শুধু তাই নয়, তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ২০১২ সালে ডাবলিন পুরস্কার পান। তিনি ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক গণিত কংগ্রেসে আমন্ত্রিত হন ও ২০১৮ সালে ইন্সটিটিউট অফ ম্যাথেমেটিক্যাল স্ট্যাটিস্টিক্সের ফেলো হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

বিজ্ঞানী অরিন্দম ঘোষ আণবিক ভাবে সূক্ষ্ম দ্বিমাত্রিক সেমিকন্ডাক্টর গবেষণার সাথে যুক্ত। যা ফাংশনাল ইলেকট্রনিক, থার্মোইলেকট্রিক এবং অপ্টোইলেকট্রনিক ডিভাইসের নতুন প্রজন্মের সূচনা করেন। তিনি পরিবাহিতা শব্দের সাথে গ্রাফিনে নতুন কোয়ান্টাম ঘটনার অনুসন্ধান করেছেন এবং কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ও সংবেদনকে মৌলিক উপায়ে প্রভাবিত করে এমন আলোক-পদার্থের মিথস্ক্রিয়াটির জন্য একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন।

বিজ্ঞানী অরিন্দম ঘোষ ২০১৩ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৯৯ সালে আইআইএসসি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ২০০৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সহযোগী গবেষক ছিলেন তিনি। তারপর ২০০৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে আইআইএসসিতে যোগ দেন। 

অরিন্দম ঘোষের কাজটি ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস (২০১৫) এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমি (২০১৭) এর ফেলোশিপ নির্বাচনের মাধ্যমে স্বীকৃত হয়েছে। ২০০৮ সালে তাঁকে স্বর্ণজয়ন্তী ফেলোশিপ সম্মানে সম্মানিত করা হয়। ২০১৮ সালে তাঁকে জে.সি বোস ফেলোশিপ ডিএসটিতে ভূষিত করা হয়েছিল।

এছাড়াও বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। তাঁর জেতা উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলো হলো ডিএই রাজা রামান্না প্রাইজ লেকচার  ইন ফিজিক্স অফ জেএনসিএএসআর (২০১৭), দ্য অক্সফোর্ড ইনস্ট্রুমেন্টস ইয়ং ন্যানোসায়েন্স অ্যাওয়ার্ড (২০১৬), দ্য পিকে লায়েনগার মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেলেন্স ইন এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিক্স (২০১৬), শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার (২০১২) এবং দ্য মেটেরিয়ালস রিসার্চ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া মেডেল (২০১২)। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments