Header Ads

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগের নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করল ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব


গত পাঁচ দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলো সম্মুখীন হয়েছে নানান বিপর্যয়ের। ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড় ভোলার আঘাতে মহামারীতে বহু মানুষ প্রাণ হারান। ২০০৯ সালে আয়লার আক্রমণে অসংখ্য নদীবাঁধ ভেঙ্গে যায়, বহু বাড়ি তছনছ হয়ে যায়। প্রায় ৩৩৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে ফণী এবং চলতি বছরে বুলবুল ও আমফানের আঘাতে চরমতর ক্ষতি হয়৷ ঝড়, ভূমিকম্প ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা মানুষ সহজেই করতে পারে, তবে এক্ষেত্রে দুর্যোগময় অঞ্চলগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হওয়ার পর সেই অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না। টেলি সংযোগ ব্যাহত হয়ে পড়ে। রেডিও সেটের মাধ্যমেও যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়না। 


বিগত দুই বছরে যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকাগুলো ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে তাতে সেখানকার মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন চিন্তিত হয়ে পড়ছে। ঝড়ের পরমুহূর্তে যদি সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয় তাহলে বিপর্যয়ের মোকাবিলা করা অনেক সহজ থেকে সহজতর হয়ে ওঠে। তাই প্রয়োজন এক উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিপর্যয় চলাকালীন যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার সমস্যাকে সমাধান করার জন্য ২০১৮ সাল থেকে গবেষণা চালিয়ে যায় ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব। এই গবেষণার ফলে এলো এক দূর্দান্ত সাফল্য। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করল ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব। 

অল্প খরচে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই স্যাটেলাইটের সাহায্যে পৃথিবীর যে-কোনো প্রান্তে রেডিও স্টেশন তৈরি করা যাবে। যে রেডিও স্টেশন বানাতে খরচ পড়বে ২ লক্ষ টাকা। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ট্রান্সমিশন ব্ল্যাক আউটের সময় এই পদ্ধতি বার্তার সাথে ছবি এমনকি ভিডিও ও পাঠানো যাবে। অ্যামেরিকান অ্যামেচার রেডিও নিউজের কাছ থেকে স্বীকৃতিও অর্জন করেছে এই পদ্ধতিটি৷ গুটিকয়েক যন্ত্রপাতি ও বাড়িতে লাগানো টিভির ডিটিএইচ অ্যান্টেনা ব্যবহার করা হয় তা দিয়েই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই বিশেষ উপগ্রহের সাহায্যে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন বিপর্যস্ত এলাকার সাথে। এই ব্যবস্থায় বিপর্যস্ত এলাকার বার্তাগুলো রেডিওতে পরিস্কার ভাবে শোনাও যাবে। 

২০১৮ সালে কাতার অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায়। অ্যামেচার রেডিওর বৈধ লাইসেন্সকারীরা তা নিখরচায় ব্যবহার করতে পারেন। আসন্ন  গঙ্গাসাগর মেলাতে প্রথম এই ব্যবস্থার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলাতে আগে যে পরিমাণ প্রাণ সংশয় হতো এখন এই পদ্ধতির সাহায্যে প্রাণ সংশয় আর খুব বেশি হবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এই স্যাটেলাইট ব্যবস্থাকে সঠিক সময়ে কাজে লাগানোর জন্য। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments