নবজাতক ও শিশুমৃত্যুর হার ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে
গোটা দেশে যখন শিশুদের অপুষ্টির হার বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। স্বাস্থ্য পরিষেবায় ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গের আমূল পরিবর্তন আসছে। পশ্চিমবঙ্গে চলতি বছরে নবজাতক ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। গত ১২ ই নভেম্বর ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক 'ন্যাশানাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে ফাইভ' এর রিপোর্টে ঠিক এই তথ্যই উঠে এসেছে।
গত বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে যে শিশুমৃত্যুর হার সম্পর্কিত রিপোর্ট বেরিয়েছিল তাতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গে নবজাতকের মৃত্যুহার ছিল প্রতি এক হাজারে গড়ে ২২ জন। এবার সেই গ্রাফটা অনেকটাই বদলে গেছে। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি এক হাজারে ১৫ জন। শিশুমৃত্যুর হার যেখানে গত বছর এক হাজারে ২৭.৫ ছিল সেখানে এ বছর সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ২২ এ। ৫ বছর কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার এক হাজারে ৩১.৮ থেকে হ্রাস পেয়ে এখন ২৫.৪।
পশ্চিমবঙ্গে শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি অপুষ্টির হারও নিম্নমুখী। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এই চিত্রটা বেশ ভালো। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এ বছর সবচেয়ে বেশি শিশুকন্যার জন্ম হয়েছে। যেটার খুবই প্রয়োজন ছিল কারণ ভারতে যেভাবে কন্যাভ্রুণ হত্যা করা হয় ও কন্যাসন্তান নিতে অনেক মানুষের এদেশে যেভাবে অনীহা আছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গে শিশুকন্যা জন্মানোর হার বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাটি রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছে। প্রতি এক হাজার পুত্রসন্তান পিছু কন্যাসন্তান জন্মেছে শহরে ৯৯৫ জন ও গ্রামে ৯২১ জন।
পশ্চিমবঙ্গে শিশুমৃত্যুর কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে রক্তাল্পতাকে। এ রাজ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৬৯ শতাংশ রক্তাল্পতার শিকার বলে জানা যাচ্ছে উক্ত রিপোর্টে। প্রসূতিদের ১০০ জনের মধ্যেও ৬২ জনই রক্তাল্পতাই ভুগছেন। তাই এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে চেষ্টা করতে হবে নবজাতক ও শিশুদের রক্তাল্পতায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাকে হ্রাস করতে। শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পাওয়া তো নিঃসন্দেহে বাংলার একটা নজির তো বটেই।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment