Header Ads

তুলাইপাঞ্জি চাল নিয়ে অভিনব গবেষণা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের


দুই দিনাজপুরে প্রধানত এই চালের চাষ হয়। এই চালের ভাতের স্বাদ জিভে জল এনে দেয়। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই চালকে লন্ডন অলিম্পিকে ফুড ফেস্টিভ্যালে পাঠিয়েছিল। ২০১৭ সালের ২৪ শে অক্টোবর জিআই স্বীকৃতি অর্জন করে এই চাল। দেশের বাইরেও এই চাল রপ্তানি হয়। এই চালের নাম তুলাইপাঞ্জি চাল। বিশ্ববিখ্যাত চাল হওয়া সত্ত্বেও তুলাইপাঞ্জি  চালের উৎপাদন খুবই কম। তুলাইপাঞ্জি চালের দাম একটু বেশি হলেও লাভের আশা খুব কম৷ কারণ ফলন বেশি নয়। আর এই সংকট কাটাতেই এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করে ফেলেছেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক ডক্টর সুভাষচন্দ্র রায়। 


সুভাষচন্দ্র রায়ের শৈশব কেটেছে কালিয়াগঞ্জ শহরে। তাই তুলাইপাঞ্জি চালের সঙ্গে আত্মিক যোগ তাঁর। দিনাজপুরের এই সুগন্ধি চাল যাতে বিশ্ববাজারে জায়গা করে নেয় ও ফলন বাড়ে, সেই উদ্দেশ্যেই তিনি গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুরে তাঁর নিজের বাড়ির ছাদে ও কালিয়াগঞ্জে পৈতৃক ভিটায় ২ বিঘা জমিতে তিনি তুলাইপাঞ্জি চাল নিয়ে গবেষণা করছেন।  

তিনি তুলাইপাঞ্জি চালের সঙ্গে  অন্য ধানের সংকর পদ্ধতিতে চাষ করে দেখেছেন দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তাও আবার এক নয়, একাধিক ধানের সঙ্গে তুলাইপাঞ্জি চালের প্রজনন ঘটিয়ে ব্যাপক ফলন পাওয়া যাবে বলে দাবী করেছেন তিনি। প্রায় ৯ বছর ধরে তিনি এটা নিয়ে গবেষণা করছেন। আর তার ফসল রঞ্জিত, আইআর-৬৪, বাসমতীর মতো উচ্চ ফলনশীল ধানের প্রজনন ঘটিয়ে অভিনব বীজ বপন পদ্ধতি। তাঁর এই গবেষণাটি গবেষণাপত্র হিসেবে 'রাইস সায়েন্স' এ স্থান পেয়েছে। 

২০১১ সালে ফিলিপিন্সের ম্যানিলাতে ইরি গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর পথচলা। ইরিতে শেখা ধানের প্রজনন বিদ্যার মাধ্যমে আইআর-৬৪, বাসমতির সঙ্গে তুলাইপাঞ্জি চালকে একত্রিত করে উচ্চমানের ফলন ও সুগন্ধিযুক্ত নতুন ধানের বীজ তৈরিতে সাফল্য পেয়েছেন। এছাড়াও এই নতুন বীজকে তিনি নাম দিয়েছেন 'তুলাইমতি'। তিনি জানান "এই ধানে বাসমতির পুষ্টি ও তুলাইপাঞ্জির সুগন্ধ মিলেমিশে রয়েছে। এমনকি এর ফলন হবে আইআর-৬৪ এর মতো বিপুলহারে।" 

বিশেষ সূত্র থেকে জানা গেছে তুলাইপাঞ্জির জিন যাতে কোনোভাবে ভিন রাজ্য বা বিদেশে চুরি না হয়, তার জন্য 'জিনম' সম্পূর্ণভাবে ফ্রিকোয়েন্সি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ডিএনএ ডেটাবেস আমেরিকার 'ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন' এ জমা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments