বুধ গ্রহে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে খাত বা ক্রেটার
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বরাবরই বাঙালির কাছে গবেষণার বিষয়। আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে যতই জানার চেষ্টা করবেন ততই নতুন নতুন তথ্য আপনি পেতেই থাকবেন। যতই দিন যাচ্ছে ওনার শ্রদ্ধা ও পুরষ্কারের ঝুলি বেড়েই চলেছে। রবীন্দ্র সেতু, রবীন্দ্রসরোবর, রবীন্দ্রতীর্থ, রবীন্দ্রসদন, রবীন্দ্রভারতী, রবীন্দ্রসরণী এরকম তো অজস্র স্থান রয়েইছে। শুধু বাংলাই নয় সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভূটানের মতো প্রায় প্রতিটি দেশেই রয়ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। জার্মানির বার্লিনে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রাস্তা, ইরানের পার্লামেন্টে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফলক, উরুগুয়ে সরকার ওনার জন্মের ১৫০ বছর উপলক্ষ্যে তৈরি করেছিল ডাকটিকিট এরকম বহু সম্মান যোগ হচ্ছে কবিগুরুর।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে ডাইনোসরেরও নামকরণ করেছেন বাঙালি জীবাশ্মবিদ শঙ্কর চ্যাটার্জী বড়পাসরাস টেগোরাই নামে। শুধু পৃথিবী নয়, অন্য গ্রহতেও রয়েছে কবিগুরুর ছাপ। বুধ গ্রহের খাতেরও নামকরণ হয়েছে কবিগুরুর নামে। বুধ গ্রহে আবিষ্কৃত খাত গুলোর নামকরণ করা হয় কবি, লেখক, চিত্রকর, ভাস্কর্যকার, উপন্যাসিক, ফটোগ্রাফার, কোরিওগ্রাফার এবং সুরকারদের নামে। ইন্টারন্যাশানাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের ওয়ার্কিং গ্রুপ ফর প্ল্যানেটারি সিস্টেম নোমেনক্ল্যাচারের নিয়ম অনুযায়ী এই সব নামকরণ হয়ে থাকে। প্রথম বাঙালি ও প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই সম্মানের অধিকারী হন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৭৬ সালে। তিনি লেখক হিসেবে এই স্বীকৃতি পান।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে এই খাতের নামকরণ করা হয় ঠাকুর (Thakur) খাত নামে। বুধ গ্রহে অবস্থিত এই খাতের ব্যাস হল ১১১ কিমি। ঠাকুর ক্রেটার বুধ গ্রহের স্থানাঙ্ক (Co-ordinates ) ৩.০৫ ডিগ্রি দক্ষিণ এবং ৬৪.৫৭ ডিগ্রি পশ্চিমে অবস্থিত। বাঙালি হিসেবে এই স্বীকৃতি বেশ গর্বের। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে বাংলাদেশের চিত্রকর জৈনাল আবেদিনের নাম অনুসারে বুধ গ্রহের আর একটি খাতের নামকরণ হয় যার নাম আবেদিন খাত। এই খাতের ব্যাস ১১৬.২৩ কিমি।
২০২০ সালের মধ্যে বুধ গ্রহে আবিষ্কৃত হয়েছে মোট ৪১৩ টি খাত। এই ৪১৩ টি খাতের মধ্যে বাঙালিদের নামে আছে দুটো খাত। বুধ গ্রহে দুজন বাঙালির নামে খাত রয়েছে কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বাঙালি এ ব্যাপারে অবহিত নয়। এই কৃতিত্ব বাঙালি উপলব্ধি করলে তবেই তার জাত্যাভিমান ফিরবে। সকল বাঙালির কর্তব্য হোক আত্মসচেতন হয়ে নিজেদের গর্বের কথা জানা।
তথ্যসূত্র- ইন্টারন্যাশানাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের ওয়ার্কিং গ্রুপ ফর প্ল্যানেটারি সিস্টেম নোমেনক্ল্যাচার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
Post a Comment