আলোর উৎসবে মেতে উঠুন টেরাকোটার রঙিন প্রদীপে
আগামী ১৪ ই নভেম্বর দীপাবলি। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। গ্রাম-শহর প্রতিটি জায়গার মানুষ গোটা বাড়ি টুনি বাল্ব দিয়ে সাজাবে৷ চায়না মোমবাতিতে বাড়ির উঠোন ও ছাদ আলোতো ভরে উঠবে। দীপাবলিতে এখন টুনি বাল্ব ও চায়না মোমবাতির রমরমা গোটা বাংলা জুড়ে। টুনি বাল্ব ও চায়না মোমবাতির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্য-কৃষ্টির এক নিদর্শন মাটির প্রদীপ।
বাংলার আদিম ঐতিহ্য মাটির প্রদীপকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনছে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া গ্রাম। যে গ্রাম টেরাকোটা শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এ বছর দীপাবলির জন্য এই গ্রামের শিল্পীরা তৈরি করেছেন টেরাকোটার রঙিন প্রদীপ। বাংলার লোকশিল্পের এক এবং অদ্বিতীয় উপাদান হলো টেরাকোটা। যে সমস্ত বাঙালি বাংলার সংস্কৃতির বিষয়ে সচেতন তারা বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আজও দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন।
গ্রামবাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে এঁটেল মাটি সংগ্রহ করে এই প্রদীপ বানানো হয়। প্রথমে মাটি দিয়ে প্রদীপের কাঠামো বানানো হয়। তারপর কাঠামোটিকে আগুনে পুড়িয়ে তার ওপর পোড়ামাটির রঙ দেওয়া হয়। টেরাকোটার প্রদীপ সৌন্দর্যে আধুনিকতাকেও হার মানায়। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পুজোর মরসুমে চাহিদা বাড়ছে টেরাকোটার রঙিন প্রদীপের। পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা দুর্গাপুজো শুরু হওয়ার আগে থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে টেরাকোটার প্রদীপ বানাতে।
বাংলার লোকশিল্পের উন্নতির জন্য রাতদিন এক করে পরিশ্রম করে চলেছেন পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা। রাজ্যের সকল জেলাতে টেরাকোটা প্রদীপ বিক্রির জন্য ক্যুরিয়ার পরিষেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে টেরাকোটা শিল্পীদের তরফে। প্রতি বছর যেভাবে চায়না আতসবাজি, চায়না মোমবাতির ব্যবহার বাড়ছে যার ফলে বাংলার ঐতিহ্য অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। বাংলার ঐতিহ্য রক্ষা করার দায়ভার শুধু শিল্পীদের নয়, বাংলার সাধারণ মানুষেরও। অতএব দীপাবলিতে বাইরের সংস্কৃতিকে অনুসরণ না করে বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতিকে অনুসরণ করতে হবে। টেরাকোটা শিল্পীদের প্রোডাক্টগুলোর ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে বাংলার বাণিজ্যের নতুন দিক উন্মোচন হতে পারে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment