পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নতুন ওভারব্রিজের দিক নির্ণায়ক সাইনবোর্ডে ব্রাত্য বাংলা ভাষা
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সকল মানুষ বহুদিন ধরে অপেক্ষা করেছিলেন একটি নতুন ওভারব্রিজের জন্য। অবশেষে অবসান হলো সেই প্রতীক্ষার। ওভারব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর শুরু হয়েছে যানবাহন চলাচল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষদের যাতায়াতের এবার অনেক সুবিধা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ওভারব্রিজের দিক নির্ণয় সাইনবোর্ডে কোথাও বাংলা নেই।
পশ্চিমবঙ্গের এক ব্যস্ততম জেলা হলো পূর্ব মেদিনীপুর। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের ২০১১ সালে রিপোর্ট অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৯৯ শতাংশ মানুষ বাংলাতে কথা বলেন। তারপরও ওভারব্রিজের সাইনবোর্ডগুলোতে কোনো বাংলা রাখা হয়নি৷ প্রতিটি রাজ্যের রাস্তাঘাট ও হাইওয়েতে সেই রাজ্যের ভাষা ব্যবহার করে সেই রাজ্যের ভাষাকে বাইরের মানুষদের চেনানো হয়। ভাষাই হলো এক একটা রাজ্যের পরিচয়। ওভারব্রিজের সমস্ত সাইনবোর্ডে বাংলা না রাখা মানে হলো সেখানকার ভূমিজ সন্তানদের অবহেলা করা।
বাংলার বুকে বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য রাখা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। এ রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী সংগঠন এর তীব্র প্রতিবাদ করছে। তারা সাইনবোর্ডে বাংলাকে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ডেপুটেশন কর্মসূচিও নিতে চলেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এই নতুন ওভারব্রিজের দিক নির্ণায়ক সাইনবোর্ডগুলো লেখা হয়েছে কেবল হিন্দি ও ইংরেজি ভাষাতে। অথচ বাংলা ভাষার লেশমাত্র ব্যবহার করা হয়নি এখানে। বাংলার সকল জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলোর মতে, "বাংলাতে যেখানে ৮৬ শতাংশ মানুষ বাঙালি সেখানে বাংলা ভাষা না রেখে বাংলার জায়গাতে হিন্দি সাইনবোর্ড ব্যবহার করার বিষয়টি মোটেও শোভনীয় নয়। সাইনবোর্ডে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি তিনটি ভাষা থাকলেও মেনে নেওয়া যেত সাইনবোর্ডটি। কিন্তু বাংলা ভাষাকে একেবারেই না রাখা বাংলা ভাষা ও বাঙালির অবমাননা।"
উক্ত ঘটনাটি এই প্রথমবারই নয়, একাধিক জেলা থেকে এই অভিযোগ উঠে এসেছে। জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো এর প্রতিবাদ করে কিছু ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে ঠিকই তবে অনেক ক্ষেত্রে বিফলও হতে হচ্ছে। এর একটাই কারণ রাজ্যের নাগরিক সমাজ এ বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তিত নয় বলেই এমনটা ঘটছে। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে নাগরিক সমাজকে অবহিত থাকতে হবে। বাংলা ভাষার গুরুত্ব বোঝাতে হবে সকলকে। না হলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলা ভাষা হারিয়ে যাবে।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment