প্রথম ভারতীয় হিসেবে আমা ডাবলাম শৃঙ্গে পা রাখতে চলেছেন চার বাঙালি
পাহাড়-পর্বতে চড়ার নেশা তাড়া করে বেড়ায় এক্সপ্লোরারদের। করোনার আবহেও পর্বত শৃঙ্গের চূড়োতে পা রাখার স্বপ্ন দেখছেন চার এভারেস্টে চড়া বাঙালি। দ্বিতীয়বারের জন্য এভারেস্টে চড়ার সুযোগ না পেলেও আমা ডাবলাম শৃঙ্গের পথে পা বাড়াচ্ছেন চার বাঙালি। নেপালে এই মুহূর্তে এভারেস্টে চড়ার ছাড়পত্র কাউকে দেওয়া হচ্ছে না। কেবল কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে হিমালয়ের অন্যান্য শৃঙ্গগুলোতে চড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। তাই তারা হিমালয়ের অন্যান্য শৃঙ্গ হিসেবে বেছে নিয়েছেন আমা ডাবলামকেই৷
আমা ডাবলাম শৃঙ্গ এক্সপ্লোরের জন্য যে চারজন বাঙালি সামিল তারা হলেন সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, দেবাশিস বিশ্বাস, মলয় মুখোপাধ্যায় এবং কিরণ পাত্র। ভারতের মধ্যে এর আগে কেউই আমা ডাবলামে যাননি৷ এই চার বাঙালি এখানে পৌঁছতে পারলে আমা ডাবলাম শৃঙ্গ এক্সপ্লোরে প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই চারজনের নাম উঠে আসবে। এই শৃঙ্গের বুকে পা রাখা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু এই চার পর্বতারোহীর দৃঢ় আত্মবিশ্বাস তাদের নিয়ে যাবে মূল গন্তব্যে।
আজ ১ লা নভেম্বর। তারা কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করেছে কাঠমান্ডুর দিকে। তারপর সেখানে একটি হোটেলে ৬ ই নভেম্বর পর্যন্ত তাদের কোয়ারান্টায়নে রাখা হবে। এরপর ৭ ই নভেম্বর থেকে শুরু যাত্রা। আমা ডাবলামের ৪,৪৫০ মিটার উচ্চতায় বানানো হবে বেসক্যাম্প। এরপর ১২ থেকে ২৫ শে নভেম্বর পর্যন্ত চলবে শৃঙ্গের পাদদেশে পৌঁছানোর পর্ব। এমন পরিকল্পনামাফিক তারা পর্বত ভ্রমণের প্রস্তুতি নেন। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল তবে হঠাৎ করে ফ্লাইটের টিকিট বাতিল হয়ে যায় তাদের, সেইজন্য ট্রেনে করে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি রওনা হবেন তারা। এবার শিলিগুড়ি থেকে কীভাবে কাঠমান্ডু যাবেন তা নিয়ে চিন্তিত তারা সকলে।
নেপালে এখনও শীত পুরোপুরি ভাবে শুরু হয়নি। ডিসেম্বরে এখানে সাধারণত শীত আসে। শীতের আগে আমা ডাবলামে অ্যাডভেঞ্চারে অনেক সুবিধা আছে যেমন তাপমাত্রা মাইনাসের ওপরে থাকে ও নির্দিষ্ট পথে কিছুটা কম সময়ে পৌঁছানো যায়। যদি শীত শুরু হয়ে যায় তাহলে আমা ডাবলামে তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রির নীচে নেমে আসবে, তখন এভারেস্টের পথে এক্সপ্লোর করতে হবে। এতে সময়ও অনেক বেশি লাগবে।
কাঠমান্ডুতে পৌঁছে এই চার ব্যক্তিকে কোভিড নাইন্টিন আরটি পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। চারজনকে বিমা করাতে হবে। সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এই চার পর্বতারোহীর আত্মবিশ্বাস তারা যে করেই হোক আমা ডাবলাম যাবেনই। আমা ডাবলামে পা রাখলেই বিশ্বের প্রথম বাঙালি হিসেবে ইতিহাস তৈরি করবেন তারা। মানসিক ভাবে তারা প্রস্তুত। এখন ভাগ্য ও শরীরের ওপর ভরসা রেখেই এক্সপিডিশনে যেতে হবে তাদের। তারা সকলেই আমা ডাবলাম জয় করে ফিরুক এই শুভকামনা। বাংলা ও বাঙালির এভাবে জয় হোক সর্বত্র।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment