Header Ads

আপনি কী চেনেন জামুড়িয়ার চিত্রগুপ্তকে?


বাংলাতে প্রতিভার কোনো অভাব নেই। প্রতিটি জেলার কোণায় কোণায় লুকিয়ে আছে অসংখ্য প্রতিভা। কেবল একটু খোঁজ করলেই সেইসব প্রতিভার সন্ধান পাওয়া যায়। আসুন প্রতিদিন আমরা বাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিভাবান মানুষদের নিয়ে আলোচনা করি৷ বাংলা ও বাঙালি সম্পর্কে সমগ্র বাঙালির ধারণার বদল ঘটানো খুব প্রয়োজন। আপনি কখনো কী পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়াতে গেছেন? যদি যান তাহলে খোঁজ করুন জামুড়িয়ার চিত্রগুপ্তকে। 


বাঙালি যে সত্যিই বুদ্ধিমান জাতি তার প্রমাণ এই বাস্তবের চিত্রগুপ্ত৷ কী এমন আছে তার মধ্যে যে তাকে চিত্রগুপ্ত বলা হয়? সে বিষয়ে এখন আলোকপাত করা যাক। পুরাণে উল্লিখিত চিত্রগুপ্তের কথা আমরা সকলেই জানি। যিনি মানবজীবনের সমস্ত হিসেব রাখেন। তিনি যেন  সাক্ষাৎ চিত্রগুপ্ত। জামুড়িয়াবাসীদের জন্ম, মৃত্যু ও বিবাহের হিসেবনিকেশ তোলা রয়েছে তার খাতাতে৷ ঐ ব্যক্তির নাম দেবশংকর বন্দোপাধ্যায়।  

১৯৫৬ সাল থেকে তিনি শুরু করেন ডায়েরি লেখার কাজ। তিনি চিত্রগুপ্তের খাতা নামে একটা খাতাও বানিয়েছেন। জামুড়িয়াবাসীর জন্ম, মৃত্যু ও বিবাহের হিসেবনিকেশ লিখে রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, আর্কাইভ যেখান থেকে হোক তথ্য খুঁজে খুঁজে সেগুলো ডায়েরিতে তুলে রাখার একটা অন্য নেশাও আছে তার৷ সাম্প্রতিক ঘটনার নানান পেপার কাটিংও তিনি সংগ্রহ করে রাখেন। তার এই সংগ্রহ থেকে অনেক কিছু জানার আছে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তাকে 'গুগুল দাদু' বলেও ডাকে। 

স্থানীয় লোক থেকে সরকারি কর্মী সকলের দরকারে লাগে তার তৈরি করা চিত্রগুপ্তের খাতাটি। প্রথম পর্যায়ে এই খাতাটি কাজে লাগতো না আর এখন এই খাতা বহু মানুষের প্রয়োজন মেটায়৷ স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকের জন্ম-মৃত্যুর তারিখের খোঁজও নিতে আসেন তার কাছে। সত্যিই এক বিরল প্রতিভা। তার প্রতিভাকে চেখে দেখতে বহু মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। দেবশংকর বন্দোপাধ্যায়ের বর্তমান বয়স ৮৭ বছর। জীবনের শেষ বয়সে এসেও চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের কাজ৷ 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা

No comments