Header Ads

বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম ভবন তৈরি করতে চলা এক বাঙালি ব্যবসায়ী


বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম ভবন তৈরি করছেন এক বাঙালি। ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩২,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে এই ভবনটি। কী চমকে গেলেন? না না, চমকানোর কিছুই নেই। বাঙালিও পারে বিলিয়ন টাকার মালিক হতে। বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম। ঢাকার কাছাকাছি পূর্বাচল নতুন শহরের বুকে তিনি গড়ে তুলতে চান এই বাড়ি। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম ভবন গড়ে তুলতে চলা এই মানুষটি হলেন ড. কালী প্রদীপ চৌধুরী। বিল গেটস, বারাম ওবামা, হিলারি কিনটন, জর্জবুশ ও রিগ্যানের মতো ব্যক্তিদের সাথে প্রতিদিন তাঁর ওঠাবসা চলে। 


ড. কালী প্রদীপ চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলসের একজন প্রবাসী বাঙালি। বিশ্বের প্রায় ৮ টি দেশে তাঁর ২৫ রকমের ব্যবসা আছে। তিনি এক বিশাল সম্পত্তির মালিক।  ক্যালিফোর্নিয়ার বুকে তাঁর সাড়ে ৩ কিমি আয়তনের একটা বিশাল বাড়ি আছে। ভারতের বুকে তাঁর আছে ১৬ টি চা বাগান। যার মধ্যে আছে  ৫০,০০০ একরের আয়তন বিশিষ্ট চা বাগান। তাঁর মালিকানায় রয়েছে ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট ২৬ টি বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ। আমেরিকার বুকে রয়েছে তাঁর ৭০ টি হাসপাতাল। তাঁর গড়া হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে কাজ করেন ৫০০০ ডাক্তার ও ১৩,০০০ এরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমেরিকার বিখ্যাত কোম্পানি কেপিসি গ্রুপের মালিক হলেন তিনি। ইউক্রেনে  আছে তাঁর নিজস্ব নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। ড. কালী প্রদীপ চৌধুরীর সম্মানে আমেরিকাতে ৫৫ কিমি দীর্ঘ সড়কপথের নামকরণ করা হয়েছে। 

চিকিৎসক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করলেও ক্রমেই বিশ্ববরেণ্য ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তাঁর কেপিসি গ্রুপ আমেরিকায় সাত হাজার একর জমির মালিক। এমনকি তাঁর আছে ৩০ লাখ বর্গফুটের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ড. কালী প্রদীপ চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের দত্তরাইল গ্রামে। তিনি জমিদার কালীপদ দত্ত চৌধুরীর একমাত্র সন্তান। তিনি বারংবার পায়ের তলার মাটি শক্ত করে এগিয়েছেন জীবনযুদ্ধে। দু-একবার তিনি জীবনে ব্যর্থ হয়েছেন ঠিকই তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফলতার মুখ দেখেছেন। ব্যর্থতাই যে সাফল্যের চাবিকাঠি একথা তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন।  

বাবা জমিদার হলেও আমেরিকায় প্রবাস জীবনের শুরুটা তাঁর মোটেও সুখকর ছিলনা। মাত্র আট ডলার পকেটে নিয়ে তিনি আমেরিকা এসেছিলেন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে তিনি প্রথম কাজের জন্য যান কিন্তু সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। ঘটনাটা তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল ঠিকই তবে তিনি কখনো ভেঙ্গে পড়েননি। মনের মধ্যে জেদ চাপে যে চাকরি করতে হলে তিনি আমেরিকাতেই করবেন৷ দীর্ঘ এগারোমাস প্রচেষ্টার পর তিনি ঐ হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ পেলেন। এখানে কাজ করার সুবাদে  তিনি অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তিনি বলেন এই হাসপাতাল তিনি একদিন কিনে নেবেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটর তাঁর কথা শুনে প্রচণ্ড হেসেছিলেন। 

অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে চ্যালেঞ্জ করতে হলে বুকের পাটা লাগে। তাঁর মধ্যে সেই বুকের পাটাটা ছিল। তাঁর চ্যালেঞ্জ একদিন সত্যি হয়। মোটা টাকার বিনিময়ে সত্যি সত্যিই তিনি কিনে ফেললেন গোটা হাসপাতালটিকে। তারপর নিষ্ঠা, সততা, আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠলেন বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকার একজন। আমেরিকার বিখ্যাত কোম্পানি কেপিসি যার নাম সারা পৃথিবী জানে। 

উজবুকেরা বলে থাকে বাঙালি নাকি ব্যবসা পারেনা। কে বলেছে? বাঙালি যদি ব্যবসা না পারতো তাহলে ড. কালী প্রদীপ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিরা কী আমেরিকাতে রাজত্ব করতে পারতো? বিষয়টা একবার ভেবে দেখুন৷ বাঙালি সম্বন্ধে লোকের ভ্রান্ত ধারণার বদল ঘটুক৷ কোনো জাতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে আগে সেই জাতি কোথায় কী করছে তার খবরাখবর জানতে হয়।

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments