Header Ads

৭৫ টি আমফান বিদ্ধস্থ পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে সমাজসেবী সংঘের এ বছরের পুজো


সেদিনের কথা ভাবলে আজও চোখে জল নেমে আসে সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের। প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমফানের আঘাতে তছনছ হয়ে যায় সুন্দরবনের জনবসতিপূর্ণ সমস্ত অঞ্চল। কারও বাড়ি ভেঙেছে, কেউ সম্বলহীন হয়েছে, কেউ স্বজনহারা, কারও জমিজমা সব ভেসে গেছে, কারও মাছের ভেঁড়ি ভেঙে গেছে৷ সুন্দরবন অঞ্চলে লোকেদের আজীবন অস্তিত্বের জন্য প্রবলভাবে সংগ্রাম করতে হয়। আমফান নরখাদকের মতো যেন সবকিছু খেয়ে নিয়েছে সুন্দরবনের। 


আমফানের দানবীয় আক্রমণে সুন্দরবনে যে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়৷ আমফানের পর পাঁচমাস কেটে গেছে৷ এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি সুন্দরবন। কত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কত সংগঠন, কত এনজিও তাদের নতুন করে বাঁচতে সাহায্য করেছে। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে কবে কেউ জানেন না।

মে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পেরিয়ে এখন অক্টোবর। দুর্গাপুজোর সামনাসামনি এসে আমরা দাঁড়িয়েছি। করোনা ও আমফানের মতো বিপর্যয়কে কাটিয়ে সুস্থ হওয়ার দিকে বাংলা এগোচ্ছে। এরই মাঝে পুজো আসছে। চেনা নিয়মে দেখতে দেখতে আবার পুজো এসে গেল। প্রশ্ন হলো বিগত বছরের মতো সেই আনন্দ বিদ্যমান থাকবে তো? তাই এবারের পুজো হোক মানুষের পুজো৷ উদ্যোগ নিচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম পুজো কমিটি সমাজসেবী সংঘ৷

সমাজসেবী সংঘের এ বছরের থিমে উঠে আসছে আমফান বিদ্ধস্থ পরিবারগুলোর কথা। তাদের পুজো এ বছর পদার্পণ করতে চলেছে ৭৫ বছরে। তাদের পুজোর ৭৫ শতাংশ বাজেট তুলে দেওয়া হচ্ছে আমফান বিদ্ধস্থ পরিবারের হাতে৷ তারা সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের ৭৫ টি আমফান বিদ্ধস্থ পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিচ্ছে। যা মানবতার এক অনন্য নজির গড়তে চলেছে। সমাজসেবী সংঘের এ বছরের পুজো শুধুই মানুষের কথা বলবে। 

আমফানে ভেঙ্গে যাওয়া ৭৫ টি পরিবারের জন্য বাড়ি বানানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে সমাজসেবী সংঘ। তাদের পুজোতে এবার কোনো চাকচিক্য থাকছে না। আমফানে বিদ্ধস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে তাদের পুজো। উৎসব তো এমনই হওয়া উচিৎ। উৎসবে এক শ্রেণী আনন্দ করবে আর এক শ্রেণী দুঃখে কাটাবে তা তো হতে পারেনা৷ ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে এ পুজো সবার। সমাজসেবী সংঘের এ বছরের পুজো মানুষের পুজো হয়ে ইতিহাস তৈরি করবে৷ 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা

No comments