দশমীতে কোথাও বিষাদের সুর তো কোথাও আনন্দধারা, দশমীতে যেখানে শুরু হয় দুর্গাপুজো
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ থেকে ১২ কিমি দূরে অবস্থিত খাদিমপুর গ্রাম। যেখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরানো দুর্গাপুজো৷ গোটা বাংলাতে বিজয়া দশমীতে যখন বিষাদের সুর বেজে ওঠে তখন এই গ্রামে শুরু হয় আনন্দের আগমন৷ এখানে বিজয়া দশমীর দিন থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এই পুজোটি বালাইচণ্ডী দুর্গাপুজো নামে অধিক পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এ পুজো চলে প্রায় পাঁচদিন ধরে।
খাদিমপুর গ্রামের বালাইচণ্ডী দুর্গাপুজোতে দুর্গার রূপ অনেকটাই আলাদা। এখানে দেবী দশভুজার বদলে চতুর্ভুজা হিসেবে পূজিত হয়৷ দেবীর চার হাতে অস্ত্র থাকলেও এখানে দেবীর পদতলে নেই মহিষাসুর। তবে দুর্গা লক্ষ্মী, সরস্বতী, গনেশ ও কার্তিক সকলকে নিয়ে সপরিবারে মঞ্চে উপস্থিত থাকে। গ্রামের বসবাসরত দেড় হাজার পরিবারের সাড়ে সাত হাজার সদস্য মহাআড়ম্বরে এই পুজোটির আয়োজন করে থাকে।
খাদিমপুরের এই দুর্গাপুজোতে গ্রামে মেলা বসে। আলোকসজ্জায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা গ্রামকে। এ পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীরা আনন্দযজ্ঞে সামিল হয়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস যে এখানকার দেবী নাকি জাগ্রত। তাই এই দেবীর টানে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন।
এই পূজা শুরু হওয়ার পিছনের কারণ হিসেবে কথিত আছে যে আগে নিয়মিত দুর্গাপুজো হতো এখানে। পুজোর সময় দশমীর দিন খরার কারণে ফসলের ক্ষতি হয় যার ফলে অনাহারে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। সেই থেকে দশমীর দিন গ্রামবাসীরা বলাইচণ্ডী পূজা শুরু করেন। গ্রামের ৫ বিঘা জমির মধ্যে প্রাচীন একটি গাছের তলায় ইটের দেওয়াল ও টিনের চাল দেওয়া একটি ছোট্ট মন্দিরে দেবীর পুজো হয়। বলাইচণ্ডী রূপী মা দুর্গার পুজোকে কেন্দ্র করে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা যায়।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment