মৃত্যুপথযাত্রীর হাসিমুখে জীবনস্মৃতি হাতড়ানো ধরা পড়লো আকিব হায়াতের 'মাটির নীচে বাড়ি' গানে
বিষয়কেন্দ্রিক গান তো অনেক শুনেছেন। এবার না হয় বিষয়কেন্দ্রিক গান থেকে বেরিয়ে একটু ভিন্ন ধরণের গান শুনুন। বাংলা মৌলিক গানের সাথে আজকাল সংযোজিত হচ্ছে নিত্যনতুন এক্সপেরিমেন্ট। এ প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে গান মানে শুধুই বিনোদন নয়, যুদ্ধের অস্ত্রও বলা যেতে পারে৷
বাংলা মৌলিক গানের জগতে এখন পরিচিত মুখদের মধ্যে অন্যতম সঙ্গীতশিল্পী হলেন আকিব হায়াত। যিনি একটু একটু করে পাল্টে ফেলছেন গানের সংজ্ঞা। যার গানের দৃশ্যপটে জীবনের হিসেব, মৃত্যু চেতনা ও সমাজের নিদারুণ চিত্র ভেসে ওঠে। আকিব হায়াত যেমন গানের কথার ওপরও জোর দেন তেমনই জোর দেন গানের আবহ মিউজিকের ওপর। 'অন্যরকম আলো', 'মৃতের চিঠি', 'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে'র মতো গান সৃষ্টি করে তিনি প্রতিভার ছাপ রেখেছেন৷ তার গানে নিজস্ব স্বতন্ত্রতা বিদ্যমান।
'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে'র পর তিনি ফিরলেন তার নতুন গান 'মাটির নীচে বাড়ি' নিয়ে। চোখধাঁধানো চিত্রায়ণের সমন্বয়ে উপস্থাপন করেছেন এই গানটি৷ ভিডিও চিত্রের শুরুতে আমরা দেখতে পাই একটি সাদা দেওয়ালের ওপরে কালো পোশাক পরিহিত এক অদ্ভুত নারী আনমনে শুয়ে আছে৷ চোখে মুখে তার কেমন যেন বিষণ্ণ ভাব। সে হাত-পা মেলে প্রস্তুত হচ্ছে নৃত্যের জন্য। গায়ক বসে একা ভাবনায় মলিন৷ হঠাৎ গায়ক পিয়ানো বাজানো শুরু করলো। পিয়ানোর জোরালো আওয়াজে দেওয়ালের ওপর অদৃশ্য হয়ে যায় সেই অদ্ভুত নারীটি। এরপর পিয়ানোর আওয়াজ জোরালো থেকে ক্রমশ কমে আসতে থাকে। পিয়ানোর ধীর আওয়াজ থেকে একটু পরেই গায়কের কণ্ঠে ভেসে আসে গানের কথা।
কেবল একটি মাত্র ঘর সেই ঘরটাকে কাজে লাগিয়েও যে গানের মধ্যে জীবনের নানান লেয়ারের কথা বলা যায় তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেছে 'মাটির নীচে বাড়ি'তে। কী অসাধারণ মায়াবী সুর এ গানের। যেমন সুর তেমনই গানের কথা আর আকিব হায়াতের কণ্ঠ নিয়ে আলাদা করে কিছু না লিখলেও চলে৷ যত দিন যাচ্ছে তার কণ্ঠ যেন আরো বেশি সুরেলা হয়ে উঠছে।
গানের মধ্যে জীবনের শেষে মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করার চেতনাকে সুস্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো বেশিরভাগ গান বিষয়ভিত্তিক হয়ে থাকে কিন্তু এই গানটি নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। গানটিতে অভিনয় করেছেন আকিব হায়াত ও পুনম সাহা। এই গানের ব্যবস্থাপক হলেন আকিব হায়াত ও সুদীপ্ত পাল।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment