পাঁচ দশক ধরে বিনামূল্যে টিউশন পড়াচ্ছেন বসিরহাটের বাঙালি শিক্ষক
মানুষের জীবনে শিক্ষার এক বড় ভূমিকা রয়েছে। জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনেও দরকার পড়ে শিক্ষার৷ একজন মানুষের সঠিক শিক্ষার জন্য প্রয়োজন পড়ে একজন আদর্শ শিক্ষকের, যারা মানুষকে সহজে শিক্ষার আলোতে দীক্ষিত করতে পারে৷ আজকের এই প্রতিবেদনে এমন একজন শিক্ষকের কথা বলবো যার কথা পড়লে গর্বে আপনার বুক ভরে উঠবে।
বসিরহাটের শিক্ষা জগতের একজন দিকপাল মানুষ হলেন সুভাষ কুণ্ডু৷ যার এক ডাকে তার কাছে পড়াশোনার জন্য ভিড় করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷ বসিরহাটের প্রতিটি লোক তাকে 'সুভাষ স্যার' নামে ডাকে। তিনি ছিলেন বসিরহাট হাইস্কুলের একজন প্রাক্তন শিক্ষক। ২০০৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তিনি প্রায় পাঁচ দশক ধরে নিজ উদ্যোগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন পড়িয়ে আসছেন৷ তিনি স্কুলজীবনে পদার্থবিদ্যা পড়াতেন।
পঞ্চাশ বছর ধরে বিনামূল্যে টিউশন পড়ানোর নজির খুব কম রয়েছে। সুভাষবাবুর কাছে শিক্ষাদানই হলো সবচেয়ে বড়ো কথা৷ তিনি নিজের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সন্তানদের মতো স্নেহ করেন। তিনি অর্থের মোহ ভুলে শিক্ষার আলো বাংলার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।
তিনি টিউশন ছাড়াও পেনশনের টাকাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাড়িতে বানিয়েছেন আধুনিক ল্যাবরেটরি। যার নাম রেখেছেন তিনি 'ইন্সটিটিউট অফ ফিজিক্স'। যে-কোনো স্কুল-কলেজের ল্যাবরেটরিকেও টেক্কা দিতে পারে তার তৈরি এই ল্যাব। এখানে পড়তে কোনো পয়সা লাগবে না। তিনি শিক্ষক থেকে নিজেই হয়ে উঠেছেন এক প্রতিষ্ঠান।
পেনশনের অর্ধেক টাকা তিনি খরচ করেন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। টিভি, ফ্রীজ না কিনে আভিজাত্য ত্যাগ করে কেবল পঞ্চাশ ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের সেবাতেই নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এ বছর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন স্কুলের খুদে বিজ্ঞানীদের তৈরি ১৬৫ টি বিজ্ঞানের মডেলের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। এর পুরো খরচ বহন করেন তিনি৷
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment