আমফান বিদ্ধস্থ সুন্দরবনের কুলতলি গ্রামের পুজোর দায়িত্বে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন'
আমফানের পর সুন্দরবনের মানুষের জীবনে যে অন্ধকার নেমে এসেছে। সেই অন্ধকার কাটাতে লড়াই করছে তারা। স্বাভাবিক ছন্দে সুন্দরবন কবে ফিরবে কেউ জানে না। তবুও অস্তিত্বের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত। বিপর্যয় কাটিয়ে সুন্দরবনের মানুষ একটু হাসি খুঁজতে চাইছে। কারণ পুজো এলো বলে কথা। কিন্তু সমস্যা হলো তারা পুজোর আনন্দটা করবে কীভাবে? এদের মুখের দিকে তাকিয়েই মানবিক উদ্যোগ নিতে এগিয়ে এলো 'কুমোরটুলি সার্বজনীন'।
বেশিরভাগ পুজো কমিটিকে যেখানে এ বছর একটা পুজো করার জন্য অজস্র কাঠ-খড় পুড়োতে হচ্ছে, সেখানে একসাথে দুটো পুজোর আয়োজন করছে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন'। চলতি বছরে তাদের পুজো ৯০ তম বর্ষে পদার্পণ করছে। বিগত কয়েক দশক ধরেই ঐতিহ্য বহন করছে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন' এর দুর্গাপুজো। এই কমিটির উদ্যোক্তাদের মতে তাদের এ বছরের পুজো হোক দায়বদ্ধতার পুজো৷
সুন্দরবন অঞ্চলের কুলতলি থানার শ্যামনগর গ্রামের প্রায় ১৯০ টি পরিবারের ৫০০ জন মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র ও পুজোর সামগ্রিক খরচের ব্যবস্থা করেছে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন।' কুলতলি গ্রামের পুজোতে দুর্গা প্রতিমাও দেওয়া হচ্ছে। আমফানের পর কুলতলি গ্রামের মানুষদের যেভাবে অসহায়ত্ব গ্রাস করেছে তাতে সুখ নামক বস্তুটাই তারা হারিয়ে ফেলেছে। বেদনার কারাগারে বন্দী সেখানকার মানুষ। বেদনার বন্দী দশা কাটিয়ে তাদের উৎসবের আলোতে মলিন করতে উদ্যোগী 'কুমোরটুলি সার্বজনীন'।
ছন্দহীন পৃথিবীর বুকে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিতে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন' এর এ বছরের থিম 'চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে'। সুন্দরবনের বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার পরও হাসিমুখে লড়াই করছে। দুর্যোগের সেই লড়াইপূর্ণ হাসি ফুটে উঠছে মণ্ডপ সজ্জাতে। শরতের উজ্জ্বল আবহাওয়াতে বিগত বছরের মতোই একই ভাবে পুজো হতে চলেছে। এই আকালের দূর্দিনে অনেকের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্কের ঘনঘটা। তার মাঝেও পুজোতে একটু আনন্দ পাওয়ার চেষ্টা সবার মনে।
'কুমোরটুলি সার্বজনীন' এর পুজো সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হতে চলেছে। অষ্টমীর পুজো থেকে সিঁদুরখেলা সবেতেই সমস্ত বিধি অবলম্বন করা হবে। মহামারির জন্য পুজোতে সকল প্রকার জাঁকজমকতা বিসর্জন দিয়ে মানবিক বন্ধনে সকলকে অটুট রাখতে চাইছে 'কুমোরটুলি সার্বজনীন'।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment