Header Ads

নবদ্বীপের নামকরণের ইতিহাস


এই সেই নবদ্বীপ। একসময় যা বাংলার অস্কফোর্ড নামে খ্যাত ছিল। এই নবদ্বীপ কখনো শাক্তদের সাধন স্থল, আবার কখনো শৈবদের পীঠস্থান, কখনো বা বৈষ্ণবদের পুণ্য ক্ষেত্র। নবদ্বীপ মানে নয়টি দ্বীপের সমন্বয়। এই নবদ্বীপের আকৃতি হচ্ছে অষ্টদল পদ্ম, অর্থাৎ আটটি পাঁপড়ি যুক্ত একটি পদ্মের মতো মাঝে রয়েছে কোরক অর্থাৎ অন্তদ্বীপ, আর অন্তদ্বীপ কে বেষ্টন করে রয়েছে আরও আটটি দ্বীপ। 


ভাগীরথী তীরস্থ  সুপ্রাচীন ঐতিহ্যশালী শহর এই  নবদ্বীপ।  নবদ্বীপ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলার একটি সুপ্রাচীন শহর ও পৌরসভা এলাকা। আর এই নবদ্বীপেই  চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান ও লীলা ক্ষেত্রের  জন্য বিখ্যাত। মূলত শহর নবদ্বীপ চৈতন্যর সারাবাংলার কাছে পরিচিত ছিল। নবদ্বীপ পৌরসভা ১৮৬৯  সালে স্থাপিত হয়।

বৈষ্ণব ধর্মের পীঠস্থান হল নবদ্বীপ, শুধু তাই নয় ১১৫৯-১২০৬ সাল বল্লাল সেন ও লক্ষণ সেন এর আমলে নবদ্বীপ ছিল প্রাচীন বাংলার রাজধানী। মূলত সুপ্রাচীন কাল থেকেই নবদ্বীপ এ  ছিল পণ্ডিতদের আনাগোনা, সংস্কৃতির পীঠস্থান তথা প্রাচীন বাংলার 'অক্সফোর্ড' বলা হয় এই নবদ্বীপকে। নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আদর্শে যেমন বৈষ্ণব ধর্মের সৃষ্টি হয়, তেমনি তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ আগম্বাগীশের স্বপ্নাদেশ এ পাওয়া প্রথম দক্ষিণা কালী মূর্তি আগমেশ্বরী মাতার সৃষ্টিও  নবদ্বীপে। এখানে সারা বছর প্রচুর উৎসব হয়, তার মধ্যে রাস উৎসব ও দোলযাত্রা উল্ল্যেখযোগ্য।

নবদ্বীপ নামের উৎস সম্বন্ধে নানা ধারণা প্রচলিত আছে। এই শহর বহুবার বৈদেশিক আক্রমণের শিকার হয়েছে, যার ফলে উচ্চারণের বিকৃতির মাধ্যমে নদীয়া ও  নবদ্বীপ সম্পর্কযুক্ত হতে পারত, যদিও তা হয়নি।  নবদ্বীপ, 'নূদীয়া',  'নওদিয়া' বা 'নদীয়াহ' হয়েছে ভাষান্তরের জন্য।

রজনীকান্ত চক্রবর্ত্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, “মিনহাজ উদ্দিন সিরাজির গ্ৰন্থে নবদ্বীপ কে নওদিয়ার  বলা হয়েছে। নওদিয়ার শব্দে নূতন দেশ”। নূতন দেশ বলতে এখানে গঙ্গা বিধৌত পলিসঞ্জাত নতুন দ্বীপকেই বোঝানো হয়েছে। 


কবি কর্ণপুর তাঁর চৈতন্য চরিতামৃত মহা কাব্যে নবদ্বীপ কে নবীন দ্বীপং বলে উল্লেখ করেছেন। 

নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদের শান্তিরঞ্জন দে জানান, গঙ্গা নবদ্বীপ শহরকে দ্বিখণ্ডিত করার আগে স্বরূপগঞ্জ ও মায়াপুর (মিয়াঁপুর চর ) নবদ্বীপ শহরের মধ্যেই ছিল৷ এছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষকরা বলছেন, ১৭৬০ সালে গঙ্গা নবদ্বীপ শহরকে দ্বিখণ্ডিত করে৷ চৈতন্যদেবের আমলে গঙ্গার গতিপথ ছিল শহরের পশ্চিম প্রান্তে৷ অর্থাৎ আজকের নবদ্বীপ স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশ দিয়ে৷

নদীয়া মূলত একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল। ১৭৮৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বকালে জেলা হিসেবে নদীয়ার আত্মপ্রকাশ। সেসময় বর্তমান হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কিছু অংশ এই জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট সাময়িক ভাবে এই জেলা পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়। তিন দিন বাদে ১৮ ই আগস্ট কিয়দংশ বাদে নদীয়া পুনরায় ভারত অধি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি নদীয়া জেলা তার বর্তমান রূপটি লাভ করে। ১৯৪৭ সালে সাময়িকভাবে জেলার নামকরণ নবদ্বীপ করা হলেও অনতিবিলম্বেই  সেই নামকরণ বাতিল হয়।
নদীয়ার নামকরণ প্রসঙ্গে কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী একটি কিংবদন্তির উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন যে ,

ভাগিরথী তীরস্থ নবসৃষ্ট চর ভূমিতে এক তান্ত্রিক প্রতিদিন সন্ধ্যায় ন' টি দিয়া ( প্রদীপ ) জ্বালিয়ে তন্ত্র সাধনা করতেন। দূর থেকে দেখে লোকে এই দ্বীপটিকে ন' দিয়ার চর বলত। আর সেই থেকেই নাকি লোকমুখে 'নদীয়া' নামের প্রচলন করে।


এই নয়টি দ্বীপের মধ্যে চারটি গঙ্গার পূর্ব পাড়ে অবস্থিত ছিল এবং অন্য পাঁচটি গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ছিল।

১) অন্তদ্বীপ - মায়াপুর, ভারুই ডাঙ্গা এর অন্তর্ভুক্ত। কথিত আছে এখানে চৈতন্যদেবের জন্ম হয়।
২) সীমন্ত দ্বীপ - সরগঙ্গা ও সিমলা এর অন্তর্ভুক্ত।
৩) গোদ্রুমদ্বীপ - গাদিগাছা, সুবর্ণবিহার প্রভৃতি এর অন্তর্ভুক্ত।
৪) মধ্যদ্বীপ - মাজীদা ও ভালুকা এর অন্তর্ভুক্ত। আর গঙ্গার পশ্চিম পাড়ের পাঁচটি দ্বীপ ও গ্রাম গুলি হল–
৫) কোলদ্বীপ - কুলিয়া তেঘরির দক্ষিন ও সমুদ্রগড় এর অন্তর্ভুক্ত।
৬) ঋতুদ্বীপ - রাতপুর, রাহুতপুর ও বিদ্যানগর এর অন্তর্ভুক্ত।
৭) মোদক্রম দ্বীপ - মাউগাছি, মামগাছি ও মহৎপুর এর অন্তর্ভুক্ত।
৮) জহ্নুদ্বীপ - জাননগর বা জানুনগর।
৯) রুদ্রদ্বীপ - রাজপুর বা রুদ্রডাঙ্গা, সঙ্কাপুর ও পূর্বস্থলী এলাকা এর অন্তর্গত।

এর থেকে অনুমান করা যায়,তখন নবদ্বীপের পরিধি বা সীমা বহু বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে গঠিত ছিল।

পশ্চিম বঙ্গ সরকার নবদ্বীপ কে Heritage City হিসেবে ঘোষণা করেছে। 

আবার কেউ কেউ 'নবদ্বীপ' নামের অর্থ অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করেন। তাঁরা মনে করেন, নবদ্বীপ বলতে নব বা নতুন  বোঝায়। তাঁদের মতে, এই এলাকাটি গঙ্গার মধ্যবর্তী একটি চর ভূমি ছিল। কালক্রমে গঙ্গার গতি পরিবর্তিত হয় ও ঐ চর ভূমি আস্তে আস্তে বিস্তৃত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ঐ অঞ্চল মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠলে সেখানে জনসমাগম হয়। তারপর তার ক্ষুদ্র পল্লী থেকে বঙ্গের রাজধানী হয়।

আবার কারও কারও মতে, পুরাকালে প্রদীপকে দিয়া বলত এবং'ন' অর্থাৎ নয়টি- এ থেকেই নাকি নদীয়া বা নবদ্বীপ নামের উৎপত্তি হয়েছে। এই মতে যাঁরা বিশ্বাসী তাঁদের মতে, গঙ্গা মধ্যবর্তী চরে যখন মনুষ্য বসতি শুরু হয়, তখন ওই চরে একজন সন্ন্যাসী প্রতিদিন রাতে নয়টি দীপ জ্বালিয়ে তান্ত্রিক সাধনা করত। দূর থেকে লোকে ওই নয়টি দ্বীপ দেখিয়ে  ন-দিয়া বলতে শুরু করে। ক্রমে ওই চরের নাম নদীয়া নামে খ্যাতি লাভ করে।

নদীয়া নামের উৎপত্তি নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও,  একথা স্পষ্ট নবদ্বীপ ও  নদিয়া একই স্থানের নাম। প্রাচীনকালের কিছু রচনা থেকে জানা যায় নদীয়া, বর্ধমান ও  হুগলি জেলার কিছু অংশ গৌড় রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আবার কালিদাসের 'রঘুবংশ' ষষ্ঠ শতকে রচিত 'বৃহৎসংহিতা' পাল-সেন আমলের নথি-লেখ- তথ্য প্রভৃতি থেকে অনুমান করা যায়, বর্তমান নদীয়াজেলা চিরকাল গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। প্রাচীনকালে তা কিছু সময় বঙ্গের অন্তর্ভুক্তও ছিল। অর্থাৎ সব সময়েই নদীয়া বঙ্গ বা গৌড় রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

নবদ্বীপ ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত সেন যুগ থেকে পাওয়া গেলেও বিভিন্ন ঐতিহাসিক পাল যুগে এবং শূরবংশে নবদ্বীপের উল্লেখ করেছেন। ইংরেজ ঐতিহাসিক নবদ্বীপ কে আদিশূরের রাজধানী বলে উল্লেখ করেছেন। দেওয়ান কার্তিকেয় চন্দ্র তাঁর 'ক্ষিতিশ বংশাবলী চরিত' গ্ৰন্থে নবদ্বীপ থেকেই নদীয়া নামের উৎপত্তির সমর্থনে নিজের অভিমত প্রকাশ করেছেন। 

প্রাচীনকালে নদীয়া জ্ঞান, শাস্ত্র ও বিদ্যা চর্চার পীঠস্থান হয়ে উঠেছিল। সে সময় নদিয়া বিদ্যা চর্চার ইতিহাসে উজ্জ্বল স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছিল। গঙ্গা তীরবর্তী নদীয়ার বিদ্যাচর্চা তখন নদীর মতোই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছিল। প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বেও নদীয়া শিক্ষা ও বিদ্যা চর্চায় সমৃদ্ধ ছিল। সিংহলের প্রাচীন ইতিহাস 'মহাবংশ' থেকে জানা যায়। বিদ্যা চর্চার ক্ষেত্রে তখন নবদ্বীপ ছিল অন্যতম শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র।

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে, সামন্ত সেন শেষ বয়সে ভাগীরথী তীরবর্তী নবদ্বীপে বাস করেন। গৌড়ের পূর্বে, লক্ষন সেন ও বল্লাল সেনের সময়ে নবদ্বীপ সেন রাজাদের রাজধানী ছিল। ১১৫৯ থেকে ১২০৬ খ্রীঃ পর্যন্ত তারা বাংলায় রাজত্ব করেন। বল্লাল সেন ও তার পরিবারের সদস্যগণ নিজেদের পাপ মোচনের জন্য ভাগীরথীর পানিতে পূণ্য স্নান করতে প্রায়ই নদীয়া আসতেন। 

কেরী ও  মার্শম্যানের ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবদ্বীপের রাজা আদিশূরের সময় তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় রাজধানী নবদ্বীপে বিদ্যা চর্চায় প্রভূত উন্নতি হয়েছিল। এই সময় রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় কবি ভট্টনারায়ণ লিখেছিলেন ' বেণীসংহার' নাট্যকাব্য। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বঙ্গদেশে দেখা দেয় দারুন দুর্যোগ। মাৎস্যন্যায় শাসন চলতে থাকে। সেই সময় বিদ্যা চর্চার ক্ষেত্রে সামগ্রিক ছেদ লক্ষ্য করা যায়।

তারপর দেশের নেতৃবর্গ দেশের মঙ্গল চিন্তা করে গোপালকে বাংলার সিংহাসনে বসালে (৭৫০খ্রিঃ) দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসে। পাল রাজাদের আমলে আবার নদীয়ার হৃতগৌরব ফিরে আসে। বিদ্যাচর্চায় আবার উন্নতি হতে থাকে। কৃষ্ণনগর থেকে কিছু দূরে তখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সুবর্ণ বিহার। সেখানে নিরবছিন্ন ভাবে চলতে থাকে বৌদ্ধ চর্চা।

লক্ষণ সেনের সমসাময়িক এডু মিশ্র নবদ্বীপ সম্বন্ধে বলেছেন,

"গঙ্গা গর্ভোস্থিত দ্বীপ দ্বীপ- পূঞ্জৈবর্হিধৃত।
প্রতিচ্যাং যস্য দেশস্য গঙ্গা ভাতি নিরন্তরম।"

নবদ্বীপ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণে। তিনি অবশ্য নদীয়া এবং নবদ্বীপ দুটি নামই উল্লেখ করেছেন–

"গঙ্গারে লইয়া জান আনন্দিত হইয়া
আসিয়া মিলিল গঙ্গা তীর্থ যে নদীয়া।
সপ্তদ্বীপ মধ্যে সার নবদ্বীপ গ্ৰাম।
একঅরাত্রি গঙ্গা তথা করিল বিশ্রাম।।"

মৃত্যুঞ্জয় মন্ডলের মতে, গঙ্গা গর্ভথ্বিত  নতুন দ্বীপটি সংস্কৃতজ্ঞ সুসংবদ্ধ উচ্চারণে হয়েছিল 'নবদ্বীপ'। ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বখতিয়ার খলজি নবদ্দীপ জয় করার পর ফারসি ভাষায় নবদ্বীপ অর্থে নতুন দ্বীপ কথাটির ভাষান্তর ঘটিয়ে' নদীয়া ' করেছেন মাত্র।

নরহরি চক্রবর্তী পূর্বে রচিত বিশাল  বৈষ্ণব সাহিত্যের কথা ও নবদ্বীপকে নয়টি দ্বীপের সমষ্টি বলা হয়নি।  তিনিই  প্রথম নয়টি স্থানকে দ্বীপ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রচার করেন।

তবে তৎকালীন নবদ্বীপের শাসক চাঁদ কাজী বৈষ্ণব সমাজকে নাম সংকীর্তন বন্ধের আদেশ জারি করলে মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদদের সঙ্গে কাজী বাড়ি গিয়ে কাজী দলনেতা উদ্ধার করেন, যা ভারতের ইতিহাসে সত্যের প্রতিষ্ঠায় প্রথম আইন অমান্য আন্দোলনের দৃষ্টান্ত। 

নবদ্বীপের ইতিহাসের সঙ্গে সংস্কৃত চর্চার ভূমিকা অনস্বীকার্য। নবদ্বীপের সংস্কৃতচর্চা নিয়ে প্রথম আকর গ্রন্থটি রচনা করেন গোপেন্দুভূষন সাংখ্যতীর্থ। ইতিহাস বলা হলেও নবদ্বীপের সংস্কৃত চর্চার একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস মাত্র।


নবদ্বীপে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এরমধ্যে চিকিৎসক সংগঠন হিসাবে রয়েছে : নবদ্বীপ হোমিও স্টাডি সার্কেল, লায়ন্স ক্লাব ইত্যাদি। ক্লাবগুলোর মধ্যেঃ পুরাতত্ত্ব পরিষদ, প্রগতি পরিষদ, আথেলেটিক ক্লাব ইত্যাদি। গ্রন্থাগারের মধ্যেঃ আদর্শ পাঠাগার, নবদ্বীপ সাধারণ গ্রন্থাগার, বঙ্গবাণী এরিয়া লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য।

সুতরাং এ কথা বলা যায়, ভাগীরথী- জলঙ্গী ধারা বিধৌত সুপ্রাচীন রাজধানী নবদ্বীপ জ্ঞানচর্চা আর চৈতন্যদেবের প্রেম ধারায় স্নাত হয়ে এমন এক ভূখণ্ডে আপন অস্তিত্বে বিরাজমান, যা শুধু স্বদেশে  নয় , বিদেশেও এক অনন্য শ্রদ্ধার স্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত।

চৈতন্য জীবনী কাব্যে পাওয়া যায় –
“ নবদ্বীপ হেন গ্রাম ত্রিভুবনে নাই। 
যঁহি অবতীর্ণ হৈলা চৈতন্য গোঁসাঞি।। 
ব্রক্ষ্মা সংহিতায় একটি শ্লোক আছে –
“ গোলক নাম্নী নিজ ধাম্নী তলে চ তস্য
দেবী মহেশ হরিধাম সুতে সুদেষু। 
তে তে প্রভাব নিচয়া  বিহিতাশ্চ যেন
গোবিন্দমাদি পুরুষম তমোহম ভজামি।। 

ছবি ও তথ্যসূত্রঃ
১) মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল, নবদ্বীপের ইতিবৃত্ত, পৃষ্ঠা-৫৯।
২) শ্রী চৈতন্য চরিতাম-কবি কর্ণপুর ৬/২৩।
৩) নবদ্বীপের ইতিবৃত্ত পৃষ্ঠা ৫৯।
৪) পশ্চিমবঙ্গ পত্রিকায় নদিয়া জেলা সংখ্যায় প্রকাশিত মোহিত রায়ের প্রবন্ধ পৃষ্ঠা ৫৩।
৫) নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদ ১৪১১ - কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী।
৬) নবদ্বীপ মহিমা।
৭)  নদীয়া কাহিনী,  কুমুদ নাথ মল্লিক জানুয়ারি ১৯৯৮।
৮) বাংলাদেশের ইতিহাস, রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রথম খন্ড অক্টোবর ১৯৮৮।
৯) বিনয় ঘোষ"পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি"তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন পৃষ্ঠা ৮৬-১২০।
১০) সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খন্ড,সম্পাদনা সুবোধ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, সাহিত্য সংসদ কলকাতা ২০০২ পৃষ্ঠা ৩।
১১) নদীয়ার গৌরব প্রথম খন্ড, নিতাই ঘোষ,  সুমতি পাবলিশার্স।
১২) সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খন্ড,সম্পাদনা সুবোধ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, সাহিত্য সংসদ কলকাতা, ২০০২ পৃষ্ঠা ৮৪৭।
১৩) উইকিপিডিয়া। 




1 comment: