ভারতের ডাকটিকিটে স্থান পেল বিষ্ণুপুরের তিনটি টেরাকোটা মন্দিরের ছবি
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা হলো বাঁকুড়া। যে জেলাকে বলা হয় 'পোড়া মাটির দেশ'। বাঁকুড়া জেলার এক প্রসিদ্ধ স্থান হলো বিষ্ণুপুর। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিষ্ণুপুর ঘরানার উৎপত্তি এখান থেকেই৷ বিষ্ণুপুর বাঁকুড়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে ভরা মনোরম স্থান হলো বাংলার বিষ্ণুপুর। যাকে মন্দিরের শহরও বলা হয়। কারণ বিষ্ণুপুর শহর জুড়ে অসংখ্য টেরাকোটার মন্দির লক্ষ্য করা যায়।
কেবল মন্দিরই নয়, বহু ঐতিহাসিক নিদর্শনেরও দেখা মেলে বিষ্ণুপুরে। মল্লরাজাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা শৈলীতে মাকড়া বা ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত স্থাপত্যের জন্য প্রসিদ্ধ। বিষ্ণুপুরের পূর্বনাম ছিল 'মল্লভূম'। একদা মল্লভূম নামে পরিচিত এই শহর কুটির শিল্প ও হস্তশিল্পের জন্যও বিখ্যাত। এই শহরে বেশকিছু প্রাচীন শিল্প আজও তাদের অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রেখেছে। পিতলের শিল্পও বিষ্ণুপুরের আরেক পরিচায়ক। আর জগদ্বিখ্যাত বালুচরি শাড়ির জন্যও বিষ্ণুপুর বিখ্যাত।
বিষ্ণুপুরের মন্দিরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাসমঞ্চ, জোড় বাংলা, শ্যামরায় মন্দির, মদনমোহন মন্দির, রাধালালজিউ মন্দির, রাধাশ্যাম মন্দির, নন্দলাল মন্দির, কালাচাঁদ মন্দির, মদনগোপাল জিউ মন্দির, রাধাগোবিন্দ মন্দির, রাধামাধব মন্দির, মৃন্ময়ী মন্দির, যুগলকিশোর মন্দির, মল্লেশ্বর মন্দির ও মহাপ্রভু মন্দির প্রভৃতি। এছাড়াও অন্যান্য স্থাপত্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দলমাদল কামান, গুমগড়, পাথরের রথ, লালাবাঈ মহল, বড় ও ছোটো পাথরের দরজা প্রভৃতি।
এবার ভারতের ডাকটিকিটে স্থান পেলো বিষ্ণুপুরের তিনটি পোড়া মাটির মন্দির৷ ডাকটিকিটে উঠে এলো পোড়া মাটির মন্দির। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই ডাকটিকিট। যেখানে দেখা গেছে বিষ্ণুপুরের মদনমোহন মন্দির, শ্যাম রাই মন্দির ও জোড় বাংলা মন্দিরের ছবি। বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে এই তিনটি পোড়ামন্দিরের ছবি ডাকটিকিটে যুক্ত হওয়ার ফলে গোটা ভারতবর্ষের মানুষ জানতে পারবে মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুরের নাম।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment