গিনিস বুকে এবার নাম লেখালেন তরুণ বাঙালি প্রসেনজিৎ কর
কখনো অশ্বত্থ গাছের পাতার মাঝে কাটিং করে ক্যামেরা সহ সত্যজিৎ রায়ের ছবি তৈরি করা। কখনো পায়রার পালকে ভারতের ক্রিকেট বিশ্বকাপের এগারো জন খেলোয়াড়ের ছবি আঁকা। কখনো পেন্সিলের শিসে বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো আকৃতির দুর্গার মূর্তি তৈরি করা। এভাবেই অসংখ্য অসম্ভব কাজকে তিনি সম্ভব করেছেন। তিনি হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের শীর্ষা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিয়ড গ্রামের বাসিন্দা ক্ষুদ্র কারিগর শিল্পী প্রসেনজিৎ কর৷
নিজের সৃষ্টিকর্মের জন্য বারবার মানুষের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রসেনজিৎ কর। তিনি পেশায় একজন মোটর মেকানিক। সমসাময়িক ঘটনা, আলোচিত বিষয়, ব্যক্তি ও উৎসবকে নিজের শিল্প সৃষ্টিতে তুলে ধরেন তিনি৷ তাঁর শিল্পকর্মের জন্য তিনি অর্জন করেছেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস, ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডস, ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ইন্ডিয়া ও রয়্যাল সাকসেস ইন্টারন্যাশনাল বুকস অফ রেকর্ডস।
প্রসেনজিৎ করের বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। দারিদ্র্যতা তাদের পরিবারের নিত্যসঙ্গী৷ পেটের দায়ে দিনের শেষে রোজগার করে নিজের পকেট থেকে অর্থ ব্যয় করে তিনি শিল্পকর্ম তৈরি করেন। তার বয়স সাতাশ বছর। তিনি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর মেদিনীপুর আইটিআই থেকে প্রোডাকশন ম্যানুফ্যাকচারিং ট্রেডে টেকনিক্যাল ডিগ্রি নিয়ে পাস করেন। এর সাথে সাথে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক হন। তাঁর বাবার তৈরি গ্যারেজের তিনি দেখভাল করেন।
শিল্পী প্রসেনজিৎ কর তাঁর অসাধারণ শিল্পকর্মের জন্য হাজারো সম্মান অর্জন করেছেন। নিজের শৈল্পিক দক্ষতাকে প্রতিফলিত করে তিনি মন জিতে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ তথ্য মন্ত্রকের৷ মেদিনীপুর ক্যুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি তার শিল্পকর্মে মুগ্ধ হয়ে তাকে 'মেদিনীপুর রত্ন' পুরস্কার দিয়েছে। রাজ্য ও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন খেতাব অর্জনের পর এবার বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করলেন তিনি৷ একটি দেশলাই কাঠির ওপর চল্লিশ জন বিপ্লবীর ছবি এঁকে গিনিস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠে এলো প্রসেনজিৎ করের। তার এই সাফল্য বাংলার সাফল্য।একজন বাঙালি হিসেবে আবারো বিশ্বসভায় উজ্জ্বল হলো বাংলার মুখ। তিনি হয়ে উঠলেন বাংলা ও বাঙালির গর্ব।
প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক
Post a Comment