Header Ads

কলম ছেড়ে সুন্দরবনে মেডিক্যাল ক্যাম্প করছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়


আজকে শিক্ষিত ও সচেতন মানুষদের নিয়ে নানা  আক্রমণাত্মক কথাবার্তা হয়। বিভিন্ন প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করা হয় তাদের। কখনো কখনো দেশদ্রোহী বলেও তাদের আক্রমণ করা হয়। শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ বাদেও শিল্প সমাজের  মানুষদের জন্যও সমাজের মানুষ তুলে রাখে একবুক অসম্মান। তার যে-কোনো বিষয়ে সমালোচনা করে তাকে শেষ করে দেওয়াটাই অনেক মানুষের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়৷ বন্যা, মহামারির মতো ঘটনা ঘটলেই শিল্প সমাজের মানুষদের দিকে আঙুল তুলে জিজ্ঞেস করা হয় আপনারা তো শিল্প নিয়েই শুধু ব্যস্ত, এই বিপদের দিনে মানুষের জন্য কী করছেন? তবে বারবার এই প্রশ্নের জবাব দিতে সফল হন তারকারা। 


আমফানের পর সুন্দরবন এক ধ্বংসাত্মক চেহারা নিয়েছে। সেখানকার অবস্থা এতোটাই খারাপ যে স্বাভাবিক হতে বছর দুই থেকে তিন লেগে যেতে পারে। সুন্দরবনের মানুষদের অবস্থা চিন্তা করে অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা রূদ্রনীল ঘোষ ও গায়িকা পিয়া চক্রবর্তীর মতো বাঙালি তারকারা ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যান সেখানে। এনারা ছাড়াও আরেকজন বাঙালি তারকা যিনি এক সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছেন৷ তিনি সুন্দরবনে রোগী দেখার জন্য ক্যাম্প করছেন। তিনি হলেন স্বনামধন্য পরিচালক ও নাট্যকার কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। 

মেঘে ঢাকা তারা, চাঁদের পাহাড়, মুখোমুখি, গুড নাইট সিটি, পাসওয়ার্ড, ককপিটের মতো অসংখ্য ছবি তিনি পরিচালনা করেছেন। কেবল পরিচালনায় নয় তিনি একজন দক্ষ অভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন। তাঁর ধ্যান-জ্ঞান সবই নাটক ও সিনেমা। তবে চলচ্চিত্র পরিচালক হওয়ার পূর্বে তিনি ছিলেন একজন নামী চিকিৎসকও৷ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে তিনি ডাক্তারি পাস করেন। এরপর নিয়মিত ডাক্তারি প্র্যাকটিস চালিয়ে গেছেন৷ ২০০৬ সালে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত থাকলেও প্রায়ই প্রেসক্রিপশন লিখেন আত্মীয়-স্বজনদের৷ এছাড়াও শ্যুটিং ইউনিট, নাটকের কোনো সদস্য অসুস্থ হলে তাঁর কাছেই সকলে আসতেন। তাই সুন্দরবনে রোগী দেখতে এতটুকুও সমস্যা হচ্ছে না তাঁর৷ দীর্ঘ ১৪ বছর পর কলম ছেড়ে গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে আবারো মানুষের সেবায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। 

সেবাই যে পরম ধর্ম এ কথা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সর্বদা মেনে চলেন। আমফানে বিপর্যস্ত সুন্দরবনে তিনি ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছেন ৩৮ টি ক্যাম্প। মেটেখালি বাজার, রায়দীঘি, সন্দেশখালির মতো সুন্দরবনের প্রতন্ত অঞ্চলে তিনি রোগী দেখছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের অর্জুন দাশগুপ্ত, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের ড. পূর্নব্রত গুন এবং তাঁর নাটকের দল 'শৈলশী'র যৌথ উদ্যোগে মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। 

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের এমন মহান উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এভাবেই প্রতিটি পেশাগত বাঙালি মানুষদের উচিৎ বাংলার দূর্দিনে বাঙালির পাশে দাঁড়ানো৷ ধর্ম-বর্ণ ভুলে সকল মানুষকে একসূত্রে আবদ্ধ করে কাজ করতে হবে সকলকে। সমাজের দায়িত্ব শুধুই যে চিকিৎসক, শিল্পী, সাহিত্যিকদের নিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি মনে করেন শিল্প যেমন শিল্পের জায়গায় আছে তেমনই শিল্পের জায়গাতেই থাক, কিন্তু মানুষের বিপদে তো শিল্পের কথা ভুলে গিয়ে নিজেকে মানুষের সেবাতেই নিয়োজিত করতে হবে৷ 

প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক

No comments