হতদরিদ্র পরিবারের হাতে কন্যাশ্রীর অর্থ তুলে দিলো বঙ্গতনয়া রিনা খাতুন
আমাদের সমাজে হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েদের সহ্য করতে হয় হাজারো যন্ত্রণা। পরিবার থেকে শুরু করে এ সমাজ প্রতিটি জায়গাতে নানান অত্যাচার তাদের সইতে হয়। তবুও মাথা উঁচু করে বাঁচার লড়াই শুরু করতে হয় তাদের। মেয়েদের কীভাবে লড়াইতে জিততে হয় কয়েকমাস আগেই শিখিয়েছে রিনা খাতুন নামের এক বাঙালি মেয়ে। বাড়ির লোক জোর করে কম বয়সে তার বিয়ে দিচ্ছিল বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে পুলিশকে জানিয়েছিল সে৷ বালিকা বিবাহের বিরুদ্ধে সে একটা প্রতিবাদ শুরু করেছিল। যে প্রতিবাদের ঝড় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে নামীদামী সংবাদপত্র ও খবরের চ্যানেল সব জায়গাতেই শুরু হয়। তার প্রতিবাদ সমাজকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে।
সেদিনের লড়াইয়ের পরও থেমে নেই রিনার কর্মকাণ্ড। তার বাড়ি হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুরে। টিভিতে সে দেখেছিল মহামারির চিত্র ও পরিযায়ী শ্রমিকদের নিদারুণ চিত্র। কীভাবে না খেতে পেয়ে রাস্তার ধারে পড়ে মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। অন্নহীন হয়ে কত মানুষের দিন কাটছে। এসব দেখে রিনা আর স্থির থাকতে পারেনি৷ পরিযায়ী শ্রমিক ও আর্তপীড়িত মানুষদের দূর্দিনে তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করতে থাকে সে। তারপর কন্যাশ্রী থেকে তার সঞ্চয় হয় ২৫০০০ টাকা। সে বর্তমানে স্নাতক স্তরের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। কন্যাশ্রীর ২৫০০০ টাকা জমা ছিল তার ব্যাঙ্কে। সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে ঐ টাকাতে রান্নার উপকরণ কিনে তার গ্রামের ৭০ টি দরিদ্র পরিবারের হাতে তুলে দেয় রিনা খাতুন।
রিনা খাতুনের মানবিক উদ্যোগকে স্বীকৃতি জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তাকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য উদয়নারায়ণপুরের পুলিশ ইন-চার্জ একটি সভার আয়োজন করেছিলেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত টলিউড তারকা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। রিনা খাতুনের হাতে ২৫০০০ টাকার একটি চেক তুলে দিন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
রিনা খাতুনের মতো মেয়েরা আজকে সমাজের জন্য যেভাবে এগিয়ে আসছে তাতে আগামীদিনে বাংলার নারীসমাজ বেশি করে এগিয়ে আসবে। বাংলার ভবিষ্যতকে আলো দেখাচ্ছে রিনার মতো বঙ্গতনয়ারা৷ এভাবেই জয় হোক বঙ্গনারীদের।
প্রতিবেদন-লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক
Post a Comment