"বাংলাতে ট্যালেন্টের অভাব নেই। শুধু নিখুঁত ভাবে চিনতে হবে। আর পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল এর সেটাই মূল ভাবনা"- মুখোমুখি আড্ডা তে পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল এর ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার রেখা রুংটা।
"কানামাছি ভোঁ ভোঁ" ছবি দিয়ে শুরু হয়েছিল তাদের যাত্রাপথ। বাংলা
ছবির ভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসা। বাংলার
ট্যালেন্ট কে এগিয়ে নিয়ে চলার ইচ্ছা। হ্যাঁ, আর আরো এক নাম
"পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল"। প্রথম ছবিতে নানা ঝড় আসে ও দ্বিতীয় ছবি "তৃতীয় অধ্যায়" কিন্তু
বাংলা ছবির জগতে শীর্ষ তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে। 2019 সালে এই কোনো প্রথম বাংলা
ছবি যা ১০০ দিন পূরন হল সগৌরবে। আর এই সব কিছু নিয়ে লিটারেসি প্যারাডাইসের সাথে
একান্ত সাক্ষাৎকারে ছিলেন পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল এর ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার রেখা
রুংটা। মুখোমুখি আড্ডা আর নানা গল্পের মধ্যে এক রাশ স্বপ্নের ছোঁয়া পুষ্পরেখা
ইন্টারন্যাশনাল কে ঘিরে। সেই আড্ডার কিছু অংশ আপনাদের জন্য।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- ম্যাডাম আপনাদের প্রথম
ছবি ছিল "কানামাছি ভোঁ ভোঁ"। কিন্তু ঠিক তার পরে এত বড়ো স্টার কাস্ট নিয়ে
এত বড়ো ছবি করার প্ল্যান কেন?
রেখা রুংটা:- কারণ যেরকম স্টোরিলাইনটা ছিল, যে কনসেপ্টটা ছিল ওতে আমাদের মনে হয়নি পাওলি ছাড়া অন্য
কোনো আর্টিস্ট ওটাকে হান্ড্রেড পার্সেন্ট জাস্টিফাই করতে পারবে, আমরা অন্য কারো কাছে
স্যাটিসফাই হতে পারিনি তাই এত বড় স্টারকে কাস্ট হিসেবে নিই। আবিরের রোলে আবীর
ছাড়া আমাদের মনে হচ্ছিলনা অন্য কোনো অ্যাক্টর ওটাকে জাস্টিফাই করবে। ঐ জন্য এত
বড় বড় কাস্টকে নিই।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- আজ একশো দিন পূর্ণ হলো
তৃতীয় অধ্যায়ের। আপনাদের কেমন লাগছে? আজকের দিন টা কতটা
মূল্যবান আপনার কাছে?
রেখা রুংটা:- আমাদের পুস্পরেখা ইন্টারন্যাশনালের পুরো টিম প্রোডিউসার, ডাইরেক্টর আমার মনে হয়
আমাদের কাছে আর্টিস্ট, কাস্ট, ক্রিউ যারাই ইনভলভড এটা
খুব বড়ো একটা ব্যাপার। আমাদের দ্বিতীয় সিনেমা ১০০ দিন পুরো করেছে এটা খুব বড়ো
ব্যাপার বাংলা সিনেমার জগতে। আমরা অত্যন্ত খুশি, আমরা স্যাটিসফায়েড। আমরা চাই সিনেমাপ্রেমীরা যেন ভবিষ্যতেও
এই ভাবে সাপোর্ট করে যাতে পুস্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল দর্শকদের আরো ভালো সিনেমা
উপহার দিতে পারে।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- তৃতীয় অধ্যায় ছবিতে আবীর চ্যাটার্জি ও পাওলি দামের
পাশাপাশি নতুন অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীর মুখ দেখা গিয়েছে। তারা খুব সুন্দর অভিনয়
করেছে। এই নতুন প্রতিভা তুলে আনা কী আপনাদের প্রধান ভাবনা?
রেখা রুংটা:- একদম। কারণ আমাদের প্রথম ছবিতেও পুরোপুরি নতুন কাস্ট ছিলো। শুধু
অমিতাভকে ছাড়া আমার মনে হয়না একটাও চেনা মুখ ছিল। আমরা চাইছি এই বাংলার মাটির
যেসব প্রতিভা রয়েছে, অসাধারণ অভিনেতা, অভিনেত্রী আছেন তাদেরকে
পুস্পরেখা ইন্টারন্যাশনালের প্ল্যাটফর্মের সুযোগ দিতে। আপনি তো কাস্টের কথা বলছেন শুধু কাস্টই নয় এই
সিনেমার মিউজিক ডিরেক্টর পর্যন্ত ছিল নতুন। অরিন এই সিনেমার মিউজিক ডিরেক্টরের কাজ
করেছে। ও এর আগে ‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ’ তে কাজ করেছে এটা ওর
দ্বিতীয় কাজ, ও এখন অনেক কাজ পাচ্ছে।
আমরা খুব খুশি যে আমরা পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল নতুন আর্টিস্টদের বা নতুন লোকদের
কাজ দিতে পারছি। আমরা বাংলা সিনেমার আরো উন্নতিসাধন চাই। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক
সকল দর্শকই বাংলা সিনেমার কথা জানেন। বাংলা মানেই সারা বিশ্ব রবীন্দ্রনাথ বা আরো
অনেক বিখ্যাত মানুষকে বোঝেন। আমরা চাই সিনেমার মাধ্যমে এই সব বাংলার ঐতিহ্যকে আরো
ছড়িয়ে দিতে, মানুষকে জানাতে। ওনাদের
লেখা বই বা যা যা কিছু আছে তা আমাদের সিনেমার মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে তুলে
ধরতে। আন্তর্জাতিক ভাবে বাংলার নামকে ছড়িয়ে দিতে চাই।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- বাংলা ছবিতে এক মূল্যবান সময় আজকের দিন। কারণ আজ কোনো
বাংলা ছবি একশো দিন পূর্ণ হল। বাংলা ছবি নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
রেখা রুংটা:- এটাই আমাদের ভাবনা, আমাদের সেকেন্ড ফিল্মটা একশো দিন চলেছে আমরা অবশ্যই খুব
আশাবাদী। আমরা ভালো কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করছি, ভালো আর্টিস্টদের নিয়ে কাজ করছি সিনেমা প্রেমীরা নিশ্চয়
সাপোর্ট করছেন। এটা তো শুধু সিনেমা বানিয়ে দিলে তো হলনা, কাস্ট নিয়ে হলনা বা আবির
পাওলিকে নিয়েই হলনা সবার সন্মিলিত প্রয়াস ছিল এটা। তাই সিনেমা লাভার্সরা সাপোর্ট
করছেন তাই একশো দিন পূর্ণ হয়েছে। অডিয়েন্সরা সাপোর্ট করছেন তাই একশো দিন চলছে।
কন্টেন্ট নিশ্চয় দর্শকদের ভালো লাগছে তাই এতদিন সাপোর্ট পাচ্ছি। আর মিউজিক নিয়ে তো
প্রশ্নই নেই সব গুলোই ছিল দুর্দান্ত, আপনি নিশ্চই শুনেছেন গানগুলো।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- পুষ্পরেখা ইন্টারন্যাশনাল এখন একটি ব্র্যান্ড । সততার
সাথে কাজ করে এই কোম্পানি। আপনাদের দেখে এখন নতুন হাউস গুলি সাহস পাবে। কিন্তু যখন
আপনারা নতুন এসেছিলেন তখন আপনাদের ভাবনা কী ছিল?
রেখা রুংটা:- এই প্রশ্নটা মনে হয়
ডাইরেক্টর ভালো বলতে পারবে। (কিছুটা মৃদু হেসে)
লিটারেসি প্যারাডাইস:- আপনারা প্রযোজনায় কীভাবে
এলেন?
রেখা রুংটা:- আমরা বিজনেসম্যন, আমরা ব্যবসা চাই। আমরা
বাংলা সিনেমার অবস্থা শুনেছি আমরা জেনেছি বাংলা সিনেমার যে স্টেট তাতে নতুন কোনো
প্রোডাকশন হাউস যদি আসে, নতুন ট্যালেন্টদের যদি
প্ল্যাটফর্ম দেয় তাহলে অনেক কিছু হতে পারে। অবশ্যই একটা তো বিজনেসের স্কোপ তো
থাকতেই হবে। শুধু যে নতুনদের প্ল্যাটফর্ম দিলাম, সিনেমা একটা বানিয়ে দিলাম বাকি সব একাই হয়ে যাবে এটা তো
হয়না। কিন্তু এখানে অনেক স্কোপ আছে, অনেক ট্যালেন্ট আছে এই ভাবনা থেকেই আমরা এসেছি। এটার জন্য
অভিজিৎ রায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোডাকশনে আসার পিছনে সাহেব ও সুরজিতের ভূমিকাও
উল্লেখযোগ্য।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- আপনারা যখন তৃতীয় অধ্যায় সিনেমাটা বানাতে শুরু করেন তখন
কী ভেবেছিলেন যে এই সিনেমা একশো দিন পরেও হাউসফুল থাকবে?
রেখা রুংটা:- না। এটা বলা উচিত কিনা জানিনা কারণ ‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ’ যখন আমরা করেছিলাম তখনও
স্টোরিলাইন ভালো ছিল, অভিনয়ও খুব ভালো ছিল, গানগুলোও ছিল দুর্দান্ত।
সেটা নিয়ে আমাদের একটু বেশিই উচ্চাশা ছিল কিন্তু কোনো কারণে সেটা হয়নি। এটার
ক্ষেত্রে আমরা জানতাম সিনেমা খুব ভালো হয়েছে। স্ক্রিনপ্লে, সিন, আউটডোর শ্যুটগুলো দেখে
মনে হচ্ছিল যে খুব ভালো একটা ছবি তৈরি হয়েছে তবে এটা যে একশো দিন পূর্ণ করবে সেটা
প্রথম দিন ভাবিনি। তবে প্রথম সপ্তাহ, দ্বিতীয় সপ্তাহ এভাবে যখন অডিয়েন্স রেসপন্স পাচ্ছিলাম, বিশেষ করে আমি হলে গিয়ে
রেসপন্সগুলো নিতাম তো তখন যেভাবে রেসপন্স পাচ্ছিলাম তা দেখে অনেকটাই আশাবাদী ছিলাম
যে না এই ফিল্মটা অনেকটা বেশিদিন চলবে। কারণ তাদের অনেকের মুখ থেকেই শুনতাম যে
অনেকদিন পর একটা ভালো সিনেমা দেখলাম।
লিটারেসি প্যারাডাইস:- আপনাদের তৃতীয় ভাবনা কী?
রেখা রুংটা:- এখন অনেক স্টোরি, স্ক্রিপ্ট আসছে কিন্তু সেরকম আমরা কিছু পাইনি যেটা নিয়ে কাজ
শুরু করবো। তবে ভালো স্ক্রিপ্ট পেলেই আমরা আবার কাজ শুরু করবো। আমরা খুব একটা
কমার্শিয়াল মুভি করাতে চাইছিনা আমরা ভালো কন্টেন্টের সিনেমাই দর্শকদের উপহার দিতে
চাই। ভালো কন্টেন্টের গল্প পেলেই কাজ শুরু করবো।
সৌজন্যে- অমিত দে ও সুমিত দে
Post a Comment